Class-XI Semester–II | Political Science | Unit-1 to 5 Notes Mark-2,4,6

UNIT - 1 (Key Concepts of Political Theory)
রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ : Mark-2

1. আইনের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
▸ আইনের বৈশিষ্ট্য হল— ① আইন বলতে এমন কতকগুলি নিয়মকানুনকে বোঝায় যা সকলে মেনে চলে। ② মানুষের বাহ্যিক আচার-আচরণ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।

2. আন্তর্জাতিক আইন কাকে বলে?
▸ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম, রীতিনীতি, প্রথা প্রভৃতি সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলিকে বলা হয় আন্তর্জাতিক আইন। ওপেনহাইম বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সভ্য দেশগুলি পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য যেসব প্রথা, রীতিনীতি, নিয়মকানুন মেনে চলে সেগুলিকে বলা হয় আন্তর্জাতিক আইন।

3. সাম্য কী?
▸ সাম্য শব্দটি কয়েকটি অর্থকে প্রকাশ করে। যেমন– ① সাম্যের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দৃষ্টিতে সমান, ② রাষ্ট্রীয় আইন দ্বারা সকল নাগরিকের সমান সুযোগসুবিধা প্রদান, ③ বিভিন্ন অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসান, ④ কোনোপ্রকার সুযোগসুবিধা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীই ভোগ করে না—তা সকলের।

4. 'নেতিবাচক সাম্য' ও 'ইতিবাচক সাম্য' বলতে কী বোঝ?
▸ ‘নেতিবাচক সাম্য’ হল কোনো বিশেষ সুযোগসুবিধা না-দেওয়া। অর্থাৎ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বংশমর্যাদা, স্ত্রীপুরুষ, সম্পত্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে সকলপ্রকার বৈষম্যের অবসানই হল ‘নেতিবাচক সাম্য'। আর সকলের মধ্যে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠাকে বলা হয় ইতিবাচক সাম্য।

5. আইনসংগত স্বাধীনতা বলতে কী বোঝ?
▸ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় হল আইনসংগত স্বাধীনতা। আইনসংগত স্বাধীনতা বলতে সেই স্বাধীনতাকে বোঝায়, যা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত, সংরক্ষিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। এরূপ স্বাধীনতার প্রবক্তাদের মতে, কোনো স্বাধীনতাই নিয়ন্ত্রণহীন হতে পারে না। সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে রাষ্ট্র আইনের মাধ্যমে প্রত্যেকের স্বাধীনতার ওপর কিছু-না-কিছু নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। এরূপ স্বাধীনতা প্রকৃতিগতভাবে সুনির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট ও সুনিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।

6. স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বলতে কী বোঝ?
▸ রাষ্ট্র আইনের মাধ্যমে ব্যক্তিস্বাধীনতা স্বীকার করে নিলেও সরকার তার ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে স্বাধীনতার অপব্যবহার করতে পারেন। স্বাধীনতা যাতে সরকার দ্বারা ক্ষুণ্ণ না হয় তার জন্য স্বাধীনতা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যেসব বিশেষ ব্যবস্থা গৃহীত হয়, তাকে বলা হয় স্বাধীনতার রক্ষাকবচ (Safeguards of Liberty)।

7. স্বাধীনতার রক্ষাকবচগুলি উল্লেখ করো। 
▸ স্বাধীনতার অপব্যবহার হতে না দিয়ে তাকে সংরক্ষণের যে পদ্ধতি, তা হল স্বাধীনতার রক্ষাকবচ। স্বাধীনতার রক্ষাকবচগুলি হল— ① সংবিধানে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি, ② বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ③ ক্ষমতা-স্বতন্ত্রীকরণ নীতি, ④ আইনের অনুশাসন, ⑤ দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা, ⑥ গণভোট, গণ উদ্যোগ, পদচ্যুতি, ⑦ সদাজাগ্রত জনমত প্রভৃতি

8. অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কাকে বলে?
▸ যার দ্বারা ব্যক্তি তার জীবনধারণের অনিশ্চয়তাগুলিকে অপসারণ করতে পারে এবং অভাব থেকে মুক্তি লাভ করে, তাকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলা হয়। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কয়েকটি উদাহরণ হল—
যোগ্যতার বিচারে কাজ পাওয়ার স্বাধীনতা, উপযুক্ত পারিশ্রমিকলাভের স্বাধীনতা, পীড়িত ও বার্ধক্য অবস্থায় রাষ্ট্রীয় সাহায্যলাভের স্বাধীনতা ইত্যাদি।

9. ‘ন্যায়ের স্বচ্ছতা' বলতে কী বোঝায়?
▸ রলস ‘ন্যায়’ এবং ‘ন্যায্যতা' বা ‘স্বচ্ছতা’ ধারণা দুটিকে একই অর্থে ব্যবহার করেননি। তিনি মনে করেন ন্যায়ের জন্য চুক্তি হবে ‘ন্যায্য’ বা ‘স্বচ্ছ’। অর্থাৎ তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ন্যায়বিচার বা Justice হবে স্বচ্ছ পদ্ধতির দ্বারা স্বচ্ছ বণ্টন।

10. রলস ‘ম্যাক্সিমাইন' বলতে কী বুঝিয়েছেন?
▸ রলস ‘ম্যাক্সিমাইন’ (Maximin) বলতে সর্বাধিক নীতিকে বুঝিয়েছেন। সমাজের সকলপ্রকার বৈষম্যের অবসান, সুবিধাভোগীদের জন্য সবচেয়ে বেশি সুযোগ প্রভৃতি বোঝাতে গিয়েই তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করেন ৷

11. এমন চার জন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর নাম লেখো যাঁরা স্বাধীনতাকে সাম্যের পরিপন্থী বলেছেন।
▸ যাঁরা স্বাধীনতাকে সাম্যের পরিপন্থী বলেছেন, তাঁরা হলেন—লর্ড অ্যাক্টন, টক্‌ভিল, লেকি প্রমুখ।

12. Greek Political Theory বইটি কে লিখেছেন? কবে তা প্রকাশিত হয়?
▸ Greek Political Theory বইটি লিখেছেন বার্কার বইটি প্রকাশিত হয় 1917 খ্রিস্টাব্দে।

13. ‘অজ্ঞতার অবগুণ্ঠন’ বলতে কী বোঝ?
▸ ‘অজ্ঞতার অবগুণ্ঠন’(Veil of Ignorance) বলতে বুঝিয়েছেন যে, এটি হল একটি প্রতীকী বিষয় যা আদি অবস্থায় অবস্থিত সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আদি অবস্থানে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের স্বার্থবুদ্ধি ও যুক্তিবোধ থাকলেও তাদের সচেতনতা না থাকায় তারা ‘অজ্ঞতার অবগুণ্ঠন’-এ থেকে যায়।

14. ন্যায়ের ধারণার কয়টি উৎস ও কী কী?
▸ ন্যায়ের ধারণার চারটি উৎস। যথা— ① ধর্ম, ② প্রকৃতি ③ অর্থনীতি এবং ④ নীতিশাস্ত্র।

15. ন্যায় সম্পর্কে ইমানুয়েল কান্ট-এর বক্তব্য কী?
▸ ন্যায় সম্পর্কে ইমানুয়েল কান্ট-এর বক্তব্য—ন্যায় হল সেই সমস্ত শর্তগুলির সমষ্টি যার অধীনে একজন ব্যক্তির ইচ্ছা অন্যের ইচ্ছার সঙ্গে স্বাধীনতার সর্বজনীন আইন অনুসারে যুক্ত হয়।

16. অধ্যাপক বার্কার কোন গ্রন্থে ন্যায়ের ধারণাটি দিয়েছেন?
▸ Principles of Social and Political Theory নামক গ্রন্থের চতুর্থ খণ্ডের প্রথম পরিচ্ছেদে অধ্যাপক বার্কার ন্যায়ের ধারণাটি দিয়েছেন।

17. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মূলকথা কী?
▸ রাষ্ট্র পরিচালনার তিন প্রধান স্তম্ভ আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতার সম্পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য হল ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মূলকথা।

18. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
▸ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির দুটি বৈশিষ্ট্য হল–① শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য স্বীকৃত হয়। ② অন্য বিভাগের কাজে কোনোরকম হস্তক্ষেপ না করা।

19. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ কাকে বলে?
▸ সরকারের তিনটি বিভাগ যখন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ক্ষমতা প্রয়োগ করে, তখন তাকে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ বলে।

20. দুটি বহু-পরিচালকবিশিষ্ট শাসনবিভাগের উদাহরণ দাও।
▸ দুটি বহু-পরিচালকবিশিষ্ট শাসনবিভাগের উদাহরণ হল এথেন্স, স্পার্টা।

21. মন্তেস্কু কোন গ্রন্থে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির আলোচনা করেছেন ? “চিরন্তন সতর্কতাই স্বাধীনতার মূল্য এবং সাহসিকতাই স্বাধীনতার মূলমন্ত্র”—কার উক্তি?
▸ মন্তেস্কু The Spirit of the Laws গ্রন্থে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির আলোচনা করেছেন।  “চিরন্তন সতর্কতাই স্বাধীনতার মূল্য এবং সাহসিকতাই স্বাধীনতার মূলমন্ত্র”—এটি পেরিক্লিসের উক্তি।

22. কোন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রথম ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিটির সমর্থন করেন? সরকারের তিনটি বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদানের নীতিকে কী বলে?
▸ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বোঁদা প্রথম ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিটির সমর্থন করেন। সরকারের তিনটি বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদানের নীতিকে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ বলে।

23. The Spirit of the Laws এবং Theory of Justice গ্রন্থ দুটির রচয়িতার নাম উল্লেখ করো।
▸ The Spirit of the Laws গ্রন্থটির রচয়িতার নাম হল মন্তেস্কু এবং A Theory of Justice গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন জন রলস।

24. অর্থনৈতিক সাম্য বলতে কী বোঝায়?
▸ বিরাতে অর্থনৈতিক সাম্য বলতে কয়েকটি বিষয়কে বোঝায়। যথা一①  সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে সাম্যনীতির অনুসরণ, ② প্রত্যেক মানুষের পছন্দ ও যোগ্যতা অনুসারে জীবিকা অনুসন্ধানের সুযোগ, ③
শ্রেণি বা গোষ্ঠীর শোষণের হাত থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন জীবিকা নির্বাহের সুযোগ।

25. আন্তর্জাতিক সাম্য বলতে কী বোঝ?
▸ সাম্যের নীতিকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ করাকে আন্তর্জাতিক সাম্য (International Equality) বলা হয়। ক্ষুদ্রবৃহৎ, শক্তিধর শক্তিহীন ও সম্পদশালী-সম্পদহীন রাষ্ট্রসমূহকে সমমর্যাদা প্রদান করা হলে এরূপ সাম্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

26. স্বাধীনতা বলতে কী বোঝ?
▸ সাধারণভাবে স্বাধীনতা হল এমন কাজের ক্ষমতা যা সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি নিজের ইচ্ছানুসারে করতে পারে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এরূপ স্বাধীনতার অর্থ হল—স্বেচ্ছাচারিতা বা উচ্ছৃঙ্খলতার নামান্তর। স্বাধীনতা বলতে বোঝায় এমন এক সামাজিক পরিবেশ, যেখানে প্রত্যেকে তার ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটিয়ে সমান সুযোগসুবিধা লাভ করে।

 Class 11 2nd Semester Notes Mark : 2
❍ History : Unit -1
❍ Political Science : Unit-1
     ⦿ Part-1
     ⦿ Part-2
_________________________________


    Mark-6 Notes   Part-1 
1. আইনের উৎসগুলি বর্ণনা করো।
অথবা, স্বাধীনতার রূপগুলি আলোচনা করে।
2. স্বাধীনতা বলতে কী বোঝ? স্বাধীনতার রক্ষাকবচগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
অথবা, আইন বলতে কী বোঝ ? আইনের উৎসগুলি লেখো।
3. ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতির পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি দাও।
অথবা, সাম্যের বিভিন্ন রূপগুলি আলোচনা করো।


1. আইনের উৎসগুলি বর্ণনা করো।
অথবা, স্বাধীনতার রূপগুলি আলোচনা করে।
আইনের উৎস : বাস্তবে সার্বভৌম শক্তির অনুমোদনকে আইনের একমাত্র উৎস বলে অভিহিত করা হলেও নানারকম সামাজিক শক্তি আইনের উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রের মতো আইনও ঐতিহাসিক বিবর্তনের ফল। বিশিষ্ট আইনবিদ হল্যান্ডের মতে, আইনের মুখ্য উৎসগুলি হল—① প্রথা,② ধর্ম, ③ বিচারব্যবস্থা, ④ ন্যায়বিচার, ⑤ আইনজ্ঞদের আলোচনা, ⑥ আইনসভা। 

① প্রথা : আইনের সবচেয়ে প্রাচীন উৎস হল প্রথা। প্রথা হচ্ছে সমাজজীবন থেকে সৃষ্ট সেইসব নিয়মকানুন যা ব্যক্তির বা সমষ্টির আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাচীন সমাজে প্রথার সাহায্যে দ্বন্দ্বের মীমাংসা করা হত। কালক্রমে, এইসব প্রথা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও বিধিবদ্ধ হয় এবং আইনের মর্যাদা লাভ করে। বাস্তবে কোনো রাষ্ট্রই প্রথাকে উপেক্ষা করে, আইন প্রণয়ন করতে পারে না। আধুনিককালে অনেক রাষ্ট্রের আইনের মধ্যে প্রথাগত বিধানের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। যেমন, ব্রিটেনে অলিখিত সংবিধানের বেশিরভাগটাই সেখানকার রীতিনীতি ও প্রথার ওপর নির্ভরশীল।

② ধর্ম : আইনের অন্যতম প্রাচীন উৎস হল ধর্ম। প্রাচীনকালে প্রায় সব সামাজিক প্রথাই ছিল ধর্মভিত্তিক। ধর্মীয় বিধিভঙ্গ ছিল নীতিবিরুদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই ধর্মীয় অনুশাসন ও রীতিনীতি প্রাচীন সমাজজীবনে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা প্রতিষ্ঠা করেছিল। এভাবে ধর্মীয় অনুশাসন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আইনের বিবর্তনে সহায়তা করেছিল।

③ বিচারব্যবস্থা : বিচারালয়ের সিদ্ধান্ত আইনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আদিম সমাজে রাজা বা দলপতির ওপর বিচারের ভার দেওয়া হত। ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে এই বিচারকরা যেসব রায় দিতেন, তা পরবর্তীকালে বিচারকার্যে আইন হিসেবে গণ্য হত। বর্তমানেও অনেক সময় এইভাবে বিচারের রায় আইন সৃষ্টি করে।

④ ন্যায়বিচার : আইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল ন্যায়বিচার দেশে প্রচলিত আইনকানুনের সাহায্যে কোনো ক্ষেত্রে যদি ন্যায়বিচারের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব না হয়, তাহলে বিচারপতিগণ নিজস্ব বিচারবুদ্ধি ও ন্যায়নীতিবোধ অনুসারে বিচারকার্য সম্পাদন করেন। এর ফলেও নতুন আইনের সৃষ্টি হয়।

⑤ আইনজ্ঞদের আলোচনা : বিভিন্ন মামলাকে কেন্দ্র করে এবং আইন-সংক্রান্ত বিষয়ে সুপণ্ডিত ব্যক্তিদের মতামত ও সিদ্ধান্ত আইনের উৎস হিসেবে কাজ করে। আইনের ওপর আইনজ্ঞদের আলোচনা, ভাষ্য, টীকা ইত্যাদি কোনো মামলার রায়দানের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। ব্ল্যাকস্টোন, কোক প্রমুখের বক্তব্য ব্রিটেনের আইনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। আমাদের দেশে মনু প্রমুখ স্মৃতি- শাস্ত্রের ব্যাখ্যাকার হিন্দু-আইনের সংস্কারসাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

⑥ আইনসভা : বর্তমান যুগে আইনসভা কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে আইন প্রণয়ন হল আইনের প্রধান উৎস। আইনসভার সদস্যরা জনমতের সঙ্গে সংগতি রেখে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করেন। জনকল্যাণকর রাষ্ট্রে ব্যাপক দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য যেসব আইনের প্রয়োজন হয়, তা তৈরি করে আইনসভা। এর ফলে আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইনের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, প্রথা, ধর্ম ইত্যাদি উৎসের গুরুত্ব ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

উপসংহার: উড্রো উইসলনের মতামত প্রসঙ্গে বলা যায়, প্রথা আইনের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন উৎস হলেও ধর্মও একই সময়ে আইন সৃষ্টিতে সাহায্য করে। পরে বিচারকের রায় এবং ন্যায়বিচার আইনের উৎস হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও আধুনিককালে আইনসভা কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে আইন প্রণয়ন এবং আইনজ্ঞদের বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা আইনের প্রধান উৎস হিসেবে গণ্য হয়। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনের অর্থ ও প্রকৃতির বদলের পাশাপাশি, আইনের উৎসগুলির গুরুত্বও ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

অথবা, স্বাধীনতার রূপগুলি আলোচনা করে।
স্বাধীনতার বিভিন্ন রূপ : স্বাধীনতার বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এর বিভিন্ন রূপ নির্দেশ করেছেন। মোটামুটিভাবে স্বাধীনতার যে রূপগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য, সেগুলি হল— ① স্বাভাবিক স্বাধীনতা, ② সামাজিক স্বাধীনতা, ③ সম্প্রদায়গত স্বাধীনতা, ④ নৈতিক স্বাধীনতা, ⑤ জাতীয় স্বাধীনতা, ⑥ আইনসংগত স্বাধীনতা।

① স্বাভাবিক স্বাধীনতা : সামাজিক চুক্তি মতবাদ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রুশো বলেছিলেন, মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন; কিন্তু সর্বত্রই সে শৃঙ্খলে আবদ্ধ (Man is born free, but everywhere he is in chains)। যখন রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়নি, তখন যে স্বাধীনতা বিরাজ করত তা ছিল স্বাভাবিক স্বাধীনতা।

② সামাজিক স্বাধীনতা : সামাজিক রীতিনীতি, ঐতিহ্য, নৈতিকতার দ্বারা সংরক্ষিত স্বাধীনতাকে সামাজিক স্বাধীনতা বলা হয়। তবে সামাজিক স্বাধীনতার ধরন এক সমাজ থেকে অন্য সমাজে পরিবর্তিত হয়। অনেক সময় সামাজিক স্বাধীনতা অমানবিক স্বাধীনতায় পর্যবসিত হয়েছে। যেমন— হিন্দুসমাজে এককালের সতীদাহ প্রথা, প্রাচীন গ্রিসের দাসপ্রথা ইত্যাদি।

③ সম্প্রদায়গত স্বাধীনতা : প্রাচীন গ্রিসের স্বাধীনতার ধারণাকে সম্প্রদায়গত স্বাধীনতা বলে আখ্যা দেওয়া হয়। গ্রিকরা ব্যক্তিগত জীবনের যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তির আস্বাদ পেতে নিজেদের সম্প্রদায় দ্বারা নিজেরাই শাসিত হতে চাইতেন। অনেকে মনে করেন, এর থেকেই আধুনিককালের জাতীয় স্বাধীনতার ধারণার সৃষ্টি হয়। 

④ নৈতিক স্বাধীনতা : যে স্বাধীনতা ব্যক্তির নীতিবোধ ও নৈতিক চেতনার ওপর প্রতিষ্ঠিত, তাকে নৈতিক স্বাধীনতা বলা হয়। আদর্শবাদী চিন্তাবিদরা নৈতিক স্বাধীনতার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেন।

⑤ জাতীয় স্বাধীনতা : কোনো পরাধীন দেশ যখন মুক্তি লাভ করে, তখন তা জাতীয় স্বাধীনতার স্বাদ পায়। ব্যক্তিস্বাধীনতার মূল ভিত্তি হল জাতীয় স্বাধীনতা। ভারত 1947 খ্রিস্টাব্দের 15 আগস্ট জাতীয় স্বাধীনতা লাভ করে।

⑥ আইনসংগত স্বাধীনতা : আধুনিক রাষ্ট্রে যে স্বাধীনতা নাগরিকরা ভোগ করেন তাকে আইনসংগত স্বাধীনতা বলা হয়। অর্থাৎ, এই ধরনের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সংবিধান ও আইনের অনুমোদন থাকে। আইনসংগত স্বাধীনতার প্রকৃতি অপেক্ষাকৃত সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট। আইনসংগত স্বাধীনতার তিনটি প্রধান দিকের মধ্যে রয়েছে— (i) ব্যক্তিগত বা পৌর স্বাধীনতা (Civil Liberty), (ii) রাজনৈতিক স্বাধীনতা (Political Liberty) ও (iii) অর্থনৈতিক স্বাধীনতা (Economic Liberty)।

✅ Study Notes Class - XI (Political Science) | Semester-II
  • Key Concepts of Political Theory
  • Nation and Nationalism  
  • Forms of Government
  • Contemporary Indian Political Thought
  • Fundamental Rights
  • Election and Representation
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন