চর্যাপদ বড় প্রশ্ন উত্তর | চর্যাপদ প্রশ্নোত্তর

CHARYAPAD IMPORTANT NOTES WITH MCQ QUESTION BENGALI

১. চর্যাপদের বিষয়বস্তুর উল্লেখসহ তার সাহিত্যমূল্যের পরিচয় দাও। অথবা, ‘চর্যাপদ'-এর সাহিত্যমূল্য বিচার করো।
চর্যাপদ-এর সাহিত্যমূল্য: বিশুদ্ধ সাহিত্যসৃষ্টির অভিপ্রায় নিয়ে 'চর্যাপদ' রচিত হয়নি। ‘সহজিয়া পন্থী' নামে পরিচিত এক শ্রেণির বৌদ্ধ সাধক তাঁদের সাধনার গূঢ় তত্ত্বকে রূপক ও সংকেতের সাহায্যে ব্যক্ত করতে চেয়েছেন এগুলির মধ্যে। 'চর্যাপদ' মুখ্যত ধর্মবিষয়ক রচনা হওয়া সত্ত্বেও চর্যার গানগুলির 'সাহিত্যমূল্য' একেবারে উপেক্ষণীয় নয়। কারণ, পরিচিত লৌকিক জীবনের আধারে সেই ধর্মকথা পরিবেশিত হওয়ায়, ধর্মীয় রহস্য না জেনেও ‘চর্যাপদ' আস্বাদন করা সম্ভব।

বহু বিচিত্র অনুভব ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন লক্ষ করা যায় 'চর্যাপদ'-এ। এর কোনো কোনোটি চিরকালীন মানবিক আবেদনের রসে সিক্ত। কুক্কুরীপাদ রচিত একটি পদে আছে—

“হাঁউ নিরাসী খমন ভতারে।
মোহোর বিগোআ কহণ ন জাই।।
ফেটলিউ গো মাত্র অন্তউড়ি চাহি।
জা এথু চাহাম সো এথু নাহি।।”

এর সরলার্থ করলে দাঁড়ায়: 'সন্ন্যাসী স্বামীর কাছে আমি নিরাশ হয়েছি। আমার সুখের কথা আর বলতে পারি না। মা গো, আমি প্রসব করেছি, এখন দরকার একটি আঁতুড়ঘরের। কিন্তু এখানে যা চাই তা পাই না।' দুঃখিনী নারীর এই কাতর আর্তি একালের পাঠকের মনকেও ছুঁয়ে যায়। ঢেণঢণপাদ রচিত একটি পদে দেখতে পাই নিঃসঙ্গ অথচ বিড়ম্বিত জীবনের বেদনা—

“টালত মোর ঘর নাহি পড়বেষী।
হাড়ীত ভাত নাঁহি নিতি আবেশী।। "

‘প্রতিবেশীহীন টিলার ওপরে আমার ঘর। হাঁড়িতে ভাত নেই অথচ অতিথির নিত্য আনাগোনা।' এই ধরনের পদগুলিতে যেমন দুঃখ-বেদনার কথা প্রকাশিত, তেমনি কোনো কোনো পদে প্রকাশ পায় রূপমুগ্ধতা ও মিলনের নিবিড় আগ্রহ। সেদিক থেকে শবরপাদের একটি রচনায় পাহাড়চূড়া বাসিনী এক শবরী বালিকার বর্ণনা খুব সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

“উঁচা উঁচা পাবত তঁহি বসই সবরী বালী।
মোরঙ্গি পীচ্ছ পরহিণ সবরী গিবত গুঞ্জরী মালী।। "

পাহাড়ি পরিবেশে অঙ্কিত এই শবরী বালিকার ছবি রসিকচিত্তে সগৌরবে স্থান করে নেয়। এ ছাড়াও এই গ্রন্থে এমন অনেক ব্যঞ্জনাগর্ভ পক্তি ও খণ্ডচিত্রের সন্ধান পাওয়া যায় যেগুলির সাহিত্যমূল্য অস্বীকার করার উপায় নেই।

‘চর্যাপদ’গুলি মূলত গান। সেজন্য ছন্দের ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও শিথিলতা আছে। তা সত্ত্বেও প্রাকৃত পাদাকুলক ছন্দের আদর্শকে যথাসম্ভব অনুসরণের চেষ্টা লক্ষ করা যায়। যেমন—

“আঙ্গণ । ঘরপণ ।। সুম ভো-। বিআতী।
কা-নেট । চৌ-রি ।। নিল অধ। রাতী।।”

পাদাকুলক ছাড়াও দোহা ও চউপইআ জাতীয় ছন্দোবন্ধের নিদর্শন পাওয়া যায় চর্যাপদে। কাজেই আঙ্গিক সম্পর্কেও পদকর্তারা সচেতন ছিলেন, এ কথা বলা যেতে পারে। সব মিলিয়ে ‘চর্যাপদ’কে উৎকৃষ্ট মানের কাব্যের মর্যাদা হয়তো দেওয়া যাবে না, তবু বলা যায়, ধর্মতত্ত্বের কাঠিন্য ভেদ করেও তার মধ্যে কাব্যরসের উৎসধারা প্রবাহিত হয়েছে।


২. ‘চর্যাপদ’-এ সমকালীন সমাজজীবনের কীরূপ পরিচয় মেলে, তা আলোচনা করো।
'চর্যাপদ'-এর সমকালীন সমাজজীবন : বিশুদ্ধ সাহিত্যসৃষ্টির অভিপ্রায় নিয়ে ‘চর্যাপদ' রচিত না হলেও চর্যাপদের কবিগণ বাস্তব জীবনের বিভিন্ন চিত্র রূপক হিসেবে ব্যবহার করেছেন তাঁদের রচনায়। সেজন্য চর্যাপদ থেকে তৎকালীন সমাজ ও জীবন সম্পর্কে অনেক কথা জানতে পারা যায়। ‘চর্যাপদ’-এর যুগে সমাজে শ্রেণিবিভাগ ছিল। তবে পদগুলিতে নিম্নবর্গীয় মানুষের জীবনযাপনসংক্রান্ত তথ্যই প্রতিফলিত হয়েছে বেশি। ‘নগর বাহিরি রেঁ ডোম্বি তোহোরি কুড়িআ’, ‘উঁচা উঁচা পাবত তঁহি বসই সবরী বালী' কিংবা ‘টালত মোর ঘর নাহি পড়বেষী' প্রভৃতি উদ্ধৃতি থেকে জানা যায়, ডোম-শবরদের মতো নিম্নশ্রেণির মানুষ বাস করত সাধারণ জনবসতি থেকে দূরে। উচ্চবর্ণের মানুষেরা এইসব নিম্নবর্ণের মানুষদের সংস্পর্শ বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করত। 

প্রাচীন বাংলার মানুষের যে কয়েকটি জীবিকার উল্লেখ আছে এই গ্রন্থে, তা হল তাঁত বোনা, চাঙারি তৈরি, পশুশিকার, নৌকা বাওয়া, মাছ ধরা, মদ তৈরি ও বিক্রি, গাছ কাটা প্রভৃতি। প্রধান খাদ্য ছিল ভাত, অন্যান্য আহার্য বস্তু হিসেবে দুধ, মাছ ও মাংসের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেকালে একান্নবর্তী পরিবারগুলির দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণরূপে ব্যবহৃত হত হাঁড়ি, ঘড়া, কুঠার, টাঙি, আরশি, তালাচাবি প্রভৃতি। ‘চর্যাপদ’-এর যুগে বাজনা বাজিয়ে বরের বিবাহ করতে যাওয়ার প্রচলন ছিল; এমনকি যৌতুক প্রথারও উল্লেখ পাওয়া যায়। সামাজিক উৎসব-অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে নাচ, গান ও অভিনয়ের যে প্রচলন ছিল; একটি পদে তার প্রমাণ পাওয়া যায়—

“নাচন্তি বাজিল গান্তি দেবী।
বুদ্ধ নাটক বিষনা হোই।।”

মাদল, পটহ, ডমরু, বাঁশি, একতারা, বীণা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র ছিল সেকালে। অবসর বিনোদনের জন্য ‘নববল’ বা দাবা খেলা হত, কর্পূর সহযোগে পান খাওয়া ছিল বিশেষ বিলাসিতা। ‘চর্যাপদ’-এর সমকালে দেশে চোর-ডাকাতের যেমন উপদ্রব ছিল, তেমনি সতর্কমূলক ব্যবস্থাও ছিল। ঘরে তালাচাবি দেওয়ার ব্যবস্থা তো ছিলই, সেই সঙ্গে প্রহরা ও শাস্তিবিধানেরও যে ব্যবস্থা ছিল, ‘উআরি (কাছারি, ‘দুষাধি’ (কোটাল), ‘প্রহরী' প্রভৃতি শব্দপ্রয়োগে তারই ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন :👇

৩. চর্যাপদের’ পুথিটি কে, কবে, কোথা থেকে আবিষ্কার করেন? এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব নির্ণয় করো।
চর্যাপদ আবিষ্কার: ‘চর্যাপদের' পুথিটি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম পুথি। এটির নাম নিয়ে মতভেদ আছে। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে নেপালের রাজদরবারের লাইব্রেরি থেকে এই পুথিটি আবিষ্কার করেন।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব : 'চর্যাপদ' বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের রচিত ধর্মীয় সংগীত হলেও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। প্রথমত, “চর্যাপদ' বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন। বাংলা ভাষার প্রাচীন রূপ কেমন ছিল, তা জানার প্রধানতম অবলম্বন ‘চর্যাপদ'। দ্বিতীয়ত, চর্যার পদগুলি বাংলা সাহিত্যেরও প্রাচীনতম নিদর্শন। তৃতীয়ত, প্রাচীন বাংলার সামাজিক ইতিহাসচর্চায় চর্যাপদের কোনো বিকল্প নেই। প্রাচীন বাংলার সমাজ ও জীবনযাত্রার পরিচয় ছড়িয়ে আছে এই গ্রন্থে। চতুর্থত, হাজার বছর আগেকার ধর্মীয় ইতিহাস জানতে গেলেও 'চর্যাপদ'-এর শরণাপন্ন হতে হয়। সব মিলিয়ে ‘চর্যাপদ' ঐতিহাসিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৪. বাংলা ভাষার ইতিহাসে 'চর্যাপদ'-এর গুরুত্ব কোথায় ?
চর্যাপদ-এর গুরুত্ব: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের রচিত ধর্মীয় সংগীত। সাধনার গূঢ় তত্ত্বকে তাঁরা নানাবিধ রূপক ও সংকেতের মাধ্যমে লিপিবদ্ধ করেছেন এই গানগুলিতে। সেদিক থেকে চর্যাপদের গুরুত্ব একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার কথা। কিন্তু 'চর্যাপদ' কেবল ধর্মীয় সংগীতমাত্র নয়, একই সঙ্গে তা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। তাই বাংলা ভাষার ইতিহাসে চর্যাপদের গুরুত্বের দিকটি বিবেচনা করে দেখা দরকার।
  1. ‘চর্যাপদ' যেহেতু বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন সেজন্য বাংলা ভাষার প্রাচীন রূপ কেমন ছিল তা জানার ক্ষেত্রে 'চর্যাপদ' অপরিহার্য।
  2. ‘চর্যাপদ' আবিষ্কারের ফলে বাংলা ভাষার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব হয়েছে। ‘চর্যাপদ' না থাকলে বাংলা ভাষার প্রাচীন যুগ সম্পর্কে অনেক তথ্য অজানা থেকে যেত। আর তার ফলে বাংলা ভাষার ইতিহাসও হত অসম্পূর্ণ।
  3. বহু বাংলা শব্দের বিবর্তনের ধারাপথটিকে চিনে নেওয়ার জন্য এই গ্রন্থের শরণাপন্ন হতে হয়।
  4. বাংলা কবিতার ছন্দের ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গেলে 'চর্যাপদ' অপরিহার্য। বাংলা ছন্দের গঠনের ক্ষেত্রে ‘চর্যাপদ'-এর ছন্দের প্রভাবকে স্বীকার করেন ছান্দসিকরা।
  5. বাংলা কবিতায় যে অন্ত্যমিল দেখা যায়, সেই অন্ত্যমিলেরও উৎস বলা যায় 'চর্যাপদ'কে।
  6. ‘চর্যাপদ’-এ ব্যবহৃত কিছু প্রবাদ ও রূপকল্প পরবর্তীকালের বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলা ভাষার ইতিহাসে এই গ্রন্থের গুরুত্ব অপরিসীম।

৫. ‘চর্যাপদ' বাংলাভাষা ও সাহিত্যের কোন যুগের নিদর্শন? চর্যাপদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সাহিত্যমূল্য বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।
❏ চর্যাপদ বাংলাভাষা ও সাহিত্যের আদি যুগের নিদর্শন।
✱  চর্যাপদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সাহিত্যমূল্য :
  1. চর্যাপদ বাংলাভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন। বাংলাভাষার প্রাচীনরূপ কেমন ছিল, চর্যাপদই তা জানার প্রধান অবলম্বন।
  2. চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যেরও প্রাচীনতম নিদর্শন। বহু বাংলা শব্দের বিবর্তনের ধারাপথটিকে চিনে নিতে তাই এই গ্রন্থের গুরুত্ব অপরিসীম।
  3. বাংলা কবিতার ছন্দের ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গেলে 'চর্যাপদ' অপরিহার্য। বাংলা ছন্দের গঠনের ক্ষেত্রে চর্যার ছন্দের প্রভাবকে স্বীকার করেন ছান্দসিকেরা।
  4. বাংলা কবিতায় যে অন্ত্যমিল দেখা যায়, সেই অন্ত্যমিলেরও উৎস বলা যায় 'চর্যাপদ'কে।
  5. ‘চর্যাপদ’-এ ব্যবহৃত কিছু প্রবাদ ও রূপকল্প পরবর্তীকালের বাংলাভাষায় স্থান করে নিয়েছে ।
  6. প্রাচীন বাংলার সামাজিক ইতিহাস চর্চায় চর্যাপদের কোনো বিকল্প নেই। প্রাচীন বাংলার সমাজজীবনের বিভিন্ন পরিচয় ছড়িয়ে আছে এই গ্রন্থে।
  7. হাজার-বারোশো বছর আগেকার ধর্মীয় ইতিহাস জানতে গেলেও আমাদের শরণাপন্ন হতে হবে চর্যাপদের।

    চর্যাপদ প্রশ্নোত্তর   

১. 'চর্যাপদ'-এর পুথি-আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ক-টি পদ আবিষ্কার করেছিলেন? চর্যাপদের সংখ্যা কত?
▸ হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ৪৬টি পূর্ণ পদ এবং ১টি অপূর্ণ বা অসমাপ্ত পদ অর্থাৎ সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ আবিষ্কার করেছিলেন। ‘চর্যাপদ'-এর মোট সংখ্যা পঞ্চাশ।
২. 'চর্যাপদ'-এর টীকার তিব্বতি অনুবাদের কবি কে? কে সেই পুথি আবিষ্কার করেন?
▸ ‘চর্যাপদ'-এর টীকার তিব্বতি অনুবাদের কবি হলেন কীর্তিচন্দ্র। ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচি সেই পুথি আবিষ্কার করেন।
৩. 'চর্যাপদ'-এর টীকা কী নামে পরিচিত? ‘চর্যাপদ'-এর প্রকৃত নাম কী?
▸ ‘চর্যাপদ’-এর সংস্কৃত ভাষায় লেখা টীকাটি ‘নির্মলগিরি টীকা' নামে পরিচিত। ‘চর্যাপদ'-এর প্রকৃত নাম ‘চর্যাগীতিকোষ'।
৪. 'চর্যাপদ'-এর পদকর্তাদের কী নামে অভিহিত করা হয়?
▸ ‘চর্যাপদ’-এর পদকর্তাদের সিদ্ধাচার্য নামে অভিহিত করা হয়।
৫. বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন কোটি? এটি কোন সময়ে লিখিত?
▸ বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন হল 'চর্যাপদ'। নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে লিখিত হয়েছিল চর্যাপদের কবিতাগুলি।
৬. কত খ্রিস্টাব্দে 'চর্যাপদ' আবিষ্কৃত হয়?
▸ ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে ‘চর্যাপদ' আবিষ্কৃত হয়।
৭. ‘চর্যাপদ’-এর পদের সংখ্যা কত? কতজন কবি এই পদগুলি লিখেছেন?
▸ 'চর্যাপদ'-এর পদের সংখ্যা ৫০ এবং  ২৪ (চব্বিশ) জন কবি এই পদগুলি লিখেছেন।
৮. ‘চর্যাপদ’-এর ভাষা যে বাংলা, তা কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
▸ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন যে, ‘চর্যাপদ’-এর ভাষা বাংলা। 
৯. ‘চর্যাপদ’-এর তিব্বতি অনুবাদ কে আবিষ্কার করেন? কোন অবাঙ্গালি পণ্ডিত ‘চর্যাপদ' নিয়ে গবেষণা করেন?
▸ প্রবোধচন্দ্র বাগচি ‘চর্যাপদ'-এর তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন। অবাঙালি পণ্ডিত রাহুল সংকৃত্যায়ন ‘চর্যাপদ’ নিয়ে গবেষণা করেন।
১০. 'চর্যাপদ'-এর প্রথম পদটির কবি কে? ‘চর্যাপদ'-এ কার রচিত পদের সংখ্যা সর্বাধিক?
▸ 'চর্যাপদ'-এর প্রথম পদটির কবি হলেন লুইপাদ। 'চর্যাপদ'-এ কাহ্নপাদ রচিত পদের সংখ্যা সর্বাধিক (১২)।
১১.  ‘চর্যাপদ’-এ বর্ণিত ডোমদের ও কাপালিকদের বৃত্তি কী কী ছিল?
▸ তাঁত তৈরি, চাঙ্গারি বোনা, নৌকা বাওয়া এবং নাট্যাভিনয়।
১২. ‘চর্যাপদ' কোন ছন্দে লেখা? অন্য কোন ভাষায় এই ছন্দ প্রচলিত ছিল?
▸ ‘চর্যাপদ’ প্রধানত পাদাকুলক ছন্দে লেখা তবে কয়েকটি পদে দোহা ও চউপাইআ ছন্দের প্রভাব আছে। প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় এই ছন্দ প্রচলিত ছিল।
১৩. ‘চর্যাপদ’-এ ব্যবহৃত ভাষা কী নামে প্রচলিত? কে এই নামকরণ করেন?
▸ ‘চর্যাপদ’-এ ব্যবহৃত ভাষা সন্ধ্যাভাষা নামে প্রচলিত। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এই নামকরণ করেন।
১৪. বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের আদি নিদর্শন কী? সেটি কে আবিষ্কার করেন? অথবা, বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম গ্রন্থটির নাম কী? কে এর পুথি আবিষ্কার করেন?
▸ বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন বা প্রাচীনতম গ্রন্থটির নাম 'চর্যাপদ' অর্থাৎ ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এর পুথি আবিষ্কার করেন।
১৫. 'চর্যাপদ'গুলি কোন্ সময়ে লেখা হয়েছিল? 'চর্যাপদ'-এর দুইজন কবির নাম উল্লেখ করো।
▸ 'চর্যাপদ’গুলি আনুমানিক নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে লেখা হয়েছিল। ‘চর্যাপদ’-এর দুজন কবি হলেন লুইপাদ ও কাহ্নপাদ।
১৬. 'চর্যাপদ' কবে কোথা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল? কী নামে?
▸ কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে অন্য কয়েকটি অ-বাংলা গ্রন্থসহ চর্যাপদ প্রকাশিত হয়েছিল 'হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোঁহা' নামে।
১৭. 'চর্যাপদ'-এর পুথিটি কে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন?
▸মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদের পুথিটি আবিষ্কার করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন