সালোকসংশ্লেষ [PHOTOSYNTHESIS]
- মূল→ গুলঞ্চ, অর্কিড
- কাণ্ড→ লাউ, ফণীমনসা
- পাতা→ সবুজ পাতা
- বৃতি→ ফুলের সবুজ বৃতি
- দল→ আতা, কাঠালিচাপার সবুজ দল
- ত্বক→ কাঁচা ফলের ত্বক
- সালোকসংশ্লেষের প্রধান অঙ্গ→ পাতা
- সালোকসংশ্লেষের প্রধান স্থান→ মেসোফিল কলা
- সালোকসংশ্লেষকারী অঙ্গাণু → ক্লোরোপ্লাস্ট
- সালোকসংশ্লেষের আলোক বিক্রিয়ার ঘটনাস্থল → ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানা
- সালোকসংশ্লেষের অন্ধকার বিক্রিয়ার ঘটনাস্থল → ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমা
- সালোকসংশ্লেষকারী রঞ্জক → ক্লোরোফিল
- সালোকসংশ্লেষে সক্ষম প্রাণী → ইউগ্লিনা, ক্রাইস্যামিবা
- সালোকসংশ্লেষে অক্ষম উদ্ভিদ → ছত্রাক, স্বর্ণলতা
- সালোকসংশ্লেষে সক্ষম ব্যাকটেরিয়া → রোডোস্পাইরিলাম, রোডোসিউডোমোনাস
- পত্রফলক চ্যাপটা ও প্রসারিত হওয়ায় আপতিত সূর্যরশ্মির অধিকাংশই শোষিত হয় এবং একইভাবে অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ Co2 শোষিত হয়।
- প্রসারিত পাতায় পত্ররন্ধ্রের সংখ্যা বেশি থাকায় সালোকসংশ্লেষের সময়ে সহজে Co2 ও O2-এর আদানপ্রদান ঘটে।
- পাতার মেসোফিল কলায়, ক্লোরোপ্লাস্টের সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় সালোকসংশ্লেষের বিক্রিয়া বেশি পরিমাণে ঘটে।
- পত্রফলকে বিন্যস্ত অসংখ্য শিরা-মধ্যস্থ জাইলেম বাহিকা দিয়ে যেমন জল পাতায় সরবরাহ হয় তেমনি সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন খাদ্য ফ্লোয়েম দ্বারা দ্রুত অপসারিত হয়।
❐ ক্লোরোফিলের উৎস (Source of Chlorophyll) : উদ্ভিদের যে-কোনো সবুজ অঙ্গ, প্রধানত সবুজ পাতার মেসোফিল কলা।
❐ সালোকসংশ্লেষে ক্লোরোফিলের ভূমিকা (Role of Chlorophyll in Photosynthesis) : ক্লোরোফিল সূর্যালোকের অদৃশ্য ফোটন কণা (photon) বা কোয়ান্টাম (quantum) শোষণ করে সক্রিয় হয় এবং শোষিত জলকে হাইড্রোজেন (H+) এবং হাইড্রক্সিল (OH−) আয়নে বিশ্লিষ্ট করে। সুতরাং সালোকসংশ্লেষে ক্লোরোফিলের ভূমিকা হল— সৌরশক্তি শোষণ করে সেই শক্তিকে রাসায়নিক শক্তিতে পরিণত করা এবং জলের আয়নীকরণ ঘটানো।
3. সূর্যালোক (Sunlight) : সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় আলো একটি অপরিহার্য উপাদান। আলোর প্রধান উৎস সূর্যালোক।সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন গ্লুকোজের মধ্যে সূর্যালোক বা সৌরশক্তি স্থৈতিক শক্তিরূপে সঞ্চিত হয়। কেবলমাত্র ক্লোরোফিল অণুই পারে সৌরশক্তিকে শোষণ করতে। সূর্যালোক দ্বারা সৃষ্ট দৃশ্যমান বর্ণালিতে (spectrum) বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (390-760nm) সাতটি রং থাকে (বেগুনি, নীল, আশমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল) এই সাতটি সূর্যালোক রিঙের মধ্যে ক্লোরোফিল প্রধানত লাল ও
নীল রং বেশি মাত্রায় শোষণ করে। সূর্যালোকের শক্তির উৎস উচ্চশক্তি সম্পন্ন অদৃশ্য ফোটন (photon) কণা। এই ফোটন কণাই সালোকসংশ্লেষের সময় ক্লোরোফিলকে উত্তেজিত ও তেজোময় করে তুলতে সক্ষম হয়। তবে আলোর প্রকৃতি, আলোর তীব্রতা এবং আলোর স্থিতিকাল সালোকসংশ্লেষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।
পাতায় আপতিত সূর্যালোকের পরিমাণ সূর্যালোকের 83% পাতায় শোষিত হয়, 12% প্রতিফলিত হয় এবং 5% প্রতিসৃত হয়। পাতায় শোষিত সৌরশক্তির মোট পরিমাণের মাত্র 0.5-35% সালোকসংশ্লেষে ব্যবহৃত হয়।
❐ আলোর উৎস (Source of Light) : সালোকসংশ্লেষে আলোর প্রধান উৎস সূর্য। তবে নির্দিষ্ট তীব্রতায় কৃত্রিম আলোতেও সালোকসংশ্লেষ ঘটে।
❐ সালোকসংশ্লেষীয় কার্য বর্ণালি (Action Spectrum of Photosynthesis) : হুভার (Hoover-1937), গ্যাব্রিয়েলসন (Gabrielsen-1948) প্রমুখ বিজ্ঞানীর পরীক্ষালব্ধ ফল থেকে প্রমাণিত হয়েছে, আলোকের দৃশ্যমান বর্ণালির সাতটি বর্ণের মধ্যে লাল 650-760nm তরফা দৈর্ঘ্য এবং নীল অংশে 430-470 nm তরঙ্গদৈর্ঘ্য সালোকসংশ্লেষ বেশি মাত্রায় সক্রিয় বা কার্যকরী হয়। বর্ণালির এই কার্যকর অংশকে সালোকসংশ্লেষীয় কার্যবর্ণালি বলে। সবুজ বর্ণের শোষণ হার অত্যন্ত কম। সবুজ বর্ণ শোষিত না হয়ে প্রতিফলিত হয় বলে পাতাগুলিকে সবুজ দেখায়।
❐ সালোকসংশ্লেষে সূর্যালোকের ভূমিকা (Role of Sunlight in Photosynthesis) : (i) ক্লোরোফিল কণাকে সক্রিয় করা এবং সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদান করা। (ii) সৌরশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে ATP (অ্যাডিনোসিন ট্রাই-ফসফেট) অণুর মধ্যে আবদ্ধ হয়। (iii) রাসায়নিক শক্তি (ATP) সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় শক্তির জোগান দেয় এবং শর্করা
জাতীয় খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে বর্তমান থাকে। (iv) সৌরশক্তিই কোশস্থ ADP-কে উচ্চশক্তিসম্পন্ন ATP-তে পরিণত হতে সহায়তা করে। সালোকসংশ্লেষে ফসফেট যৌগের ATP-তে পরিণত হওয়াকে ফোটোসিন্থেটিক ফসফোরাইলেশন (photosynthetic phosphorylation) বলে।
4. জল (Water) : জল সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত একটি প্রধান উপাদান। সবুজ উদ্ভিদ মাটির কৈশিক জল (capillary water) মূলরোমের সাহায্যে শোষণ করে কাণ্ডের জাইলেম বাহিকার মাধ্যমে পাতার মেসোফিল কলার কোশে পৌঁছে দেয়। সালোক- সংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় এক অণু গ্লুকোজ উৎপাদনের জন্য বারো অণু জলের প্রয়োজন হয়।
❐ জলের উৎস (Source of Water) : (i) স্থলজ উদ্ভিদের জলের উৎস মাটির কৈশিক জল। (ii) জলজ উদ্ভিদের জলের উৎস বিভিন্ন জলাশয়। (iii) পরাশ্রয়ী উদ্ভিদের জলের উৎস বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প। আহরণ কৌশল (Mechanism of Collection) : স্থলজ উদ্ভিদ মূলরোম দ্বারা মাটির জল অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় শোষণ করে। জলজ উদ্ভিদ জলে নিমজ্জিত অংশ (সম্পূর্ণ অথবা আংশিক) দিয়ে অন্তঃঅভিস্রবণ ও ব্যাপন প্রক্রিয়ায় জল শোষণ করে। পরাশ্রয়ী উদ্ভিদেরা বায়বীয় মূলে অবস্থিত ভেলামেন কলার* সাহায্যে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প শোষণ করে।
❐ সালোকসংশ্লেষে জলের ভূমিকা (Role of Water in Photosynthesis) : (i) জল সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার একটি অন্যতম কাঁচামাল। (ii) জল সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার সময় ক্লোরোফিল অণুকে ইলেকট্রন প্রদান করে। (iii) সালোকসংশ্লেষের অন্ধকার দশায় কার্বন ডাইঅক্সাইডকে বিজারিত করার জন্য প্রয়োজনীয় হাইড্রোজেন জল বিশ্লিষ্ট হয়েই উৎপন্ন হয়। (iv) সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় উপজাত পদার্থরূপে যে অক্সিজেন উৎপন্ন হয় তার উৎস জল।
(৬) সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতি (Mechanism of Photosynthesis) : সালোকসংশ্লেষ একটি শারীরবৃত্তীয় জটিল প্রক্রিয়া। সালোকসংশ্লেষের সময় বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড পত্ররন্ধ্রের মাধ্যমে পাতায় প্রবেশ করার পর সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ক্লোরোফিলের সহায়তায় জল ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শর্করা জাতীয় পদার্থের সৃষ্টি হয়। আসলে সালোকসংশ্লেষ একটি জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া, যেখানে জল জারিত হয়ে অক্সিজেন মুক্ত করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড বিজারিত হয়ে শর্করা প্রস্তুত করে। সালোকসংশ্লেষের সামগ্রিক রাসায়নিক বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ।
1905 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ব্ল্যাকম্যান (Blackmann) প্রথম প্রমাণ করেন সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াটি দুটি পৃথক পর্যায়ে সম্পন্ন হয়, যথা— (A) আলোক বিক্রিয়া (Light reaction) বা আলোক দশা (Light Phase) এবং (B) অন্ধকার বিক্রিয়া (Dark reaction) বা অন্ধকার দশা (Dark phase)।
(A) আলোক দশা (Light Phase) : সালোকসংশ্লেষের আলোক দশা সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানার মধ্যে সম্পন্ন হয়। আলোর উপস্থিতিতে ঘটে বলে সালোকসংশ্লেষের এই পর্যায়টিকে আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে। আলোক বিক্রিয়ার প্রধান উপাদানগুলি হল সূর্যালোক, জল এবং ক্লোরোফিল। এছাড়াও NADP এবং ADP-এর প্রয়োজন হয়। এই বিক্রিয়ার পর্যায়গুলি নিম্নরূপ— 1. ক্লোরোফিলের সক্রিয়তা (Activation of Chlorophyll) : এই পর্যায়ের প্রধান কাজ সৌরশক্তির শোষণ এবং সংগ্রহ। ক্লোরোফিল সূর্যালোকের অসংখ্য সূক্ষ্ম অদৃশ্য ফোটন বা কোয়ান্টাম শোষণ করে সক্রিয় ও উত্তেজিত (Chl+) হয়ে ওঠে।
2. ফোটোলাই সিস (Photolysis): সক্রিয় ক্লোরোফিল কোশস্থ জলকে হাইড্রোজেন (H+) এবং হাইড্রক্সিল (OH−) আয়নে বিশ্লিষ্ট করে। সূর্যালোকের উপস্থিতিতে জলের এইরূপ বিশ্লিষ্ট হওয়াকে জলের আলোক-বিশ্লেষণ বা ফোটোলাইসিস বলে। বিজ্ঞানী রোবিন হিল (Robin Hill→ 1940)-এর নাম অনুসারে একে হিল বিক্রিয়া (Hill reaction) বলে।
এই ভেঙে যাওয়া হাইড্রোজেনকে (H+) কোশ-মধ্যস্থ কোনো হাইড্রোজেন গ্রাহক গ্রহণ করে হাইড্রোজেন-গ্রাহক যৌগ তৈরি করে। বিজারিত হাইড্রোজেন-গ্রাহক যৌগটি বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইডকে গ্রহণ করে পরবর্তী অন্ধকার দশায় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পদার্থ তৈরি করে।
3. বিজারিত NADPH গঠন (Formation of reduced NADPH) : ফোটোলাইসিস পর্যায়ে ভেঙে যাওয়া হাইড্রোজেন আয়ন (H+) পাতার কোশে অবস্থিত NADP+(নিকোটিনামাইড অ্যাডেনাইন ডাই নিউক্লিওটাইড ফসফেট) নামক হাইড্রোজেন- গ্রাহকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিজারিত NADPH (Arnon- 1951 ) গঠন করে। NADP+ কে হিল বিকারক (Hill reagent) বলে। যা বিজারিত NADPH + H+ বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইডকে গ্রহণ করে পরবর্তী অন্ধকার দশায় নিয়ে যায়।
4. অক্সিজেন উৎপাদন (Production of oxygen) : ফোটোলাইসিস পর্যায়ে উৎপন্ন হাইড্রক্সিল (OH−) আয়ন থেকে ইলেকট্রন বিচ্যুত হয়ে হাইড্রক্সিল মূল্ক (OH) গঠিত হয়। চার অণু হাইড্রক্সিল মূলক থেকে দু-অণু জল এবং এক অণু অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। এই অক্সিজেন পত্ররন্ধ্র দিয়ে পরিবেশে নির্গত হয়ে যায়, 4OH-→ 4(OH)+4e- 4(OH) → 2H2O + O2
5. ফোটোফসফোরাইলেশন (Photophosphorylation) : পাতার কোশে সতি এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ ADP (অ্যাডিনোসিন ডাই ফসফেট) আলোক দশায় অজৈব ফসফেটের (Pi) সঙ্গে যুক্ত হয়ে (অচক্রাকার ও চক্রাকার ফসফোরাইলেশন পদ্ধতিতে) উচ্চশক্তিসম্পন্ন যৌগ ATP (অ্যাডিনোসিন ট্রাই ফসফেট) গঠন করে। এই পদ্ধতিকে ফোটোফসফোরাইলেশন বা সালোকসংশ্লেষীয় ফসফোরীভবন বলে। এই ATP থেকে অন্ধকার বিক্রিয়ার জন্য শক্তি সরবরাহ হয়। আর জীবকোশে একমাত্র ATP অণুর মধ্যে শক্তি সজ্জিত থাকে বলে ATP-কে এনার্জি কারেন্সি (Energy Currency) বলে।
- চক্রাকার ফোটোফসফোরাইলেশন : P700 (PSI) থেকে বিচ্যুত ইলেকট্রন (e-) কয়েকটি ইলেকট্রন বাহকের মাধ্যমে পুনরায় P700-তে ফিরে আসে। এই চক্রে 2 অণু ATP উৎপন্ন হয়।
- অচক্রাকার ফোটোফসফোরাইলেশন : প্রথম পর্যায়ে P680 থেকে বিচ্যুত ইলেকট্রন (e-) ইলেকট্রন বাহকের মাধ্যমে বাহিত হয়ে P700 এসে পৌঁছোয়। পরবর্তী পর্যায়ে P700 থেকে নির্গত ইলেকট্রনকে ইলেকট্রন বাহক NADP-র কাছে পাঠায়। NADP হাইড্রোজেন আয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়ে NADPH + H+ গঠন করে। হাইড্রোজেন আয়ন জল বিশ্লিষ্ট হয়ে (H2O → H-1 + H-) উৎপন্ন হয়। এই চক্রে O2, NADPH + H+ এবং ATP উৎপন্ন হয়।
(B) অন্ধকার দশা (Dark Phase) : সালোকসংশ্লেষে আলোক দশার পরেই অন্ধকার দশাটি ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমা অঞ্চলে ঘটে। এই দশায় আলোর কোনো প্রয়োজন হয় না বলে একে অন্ধকার দশা বলে। অন্ধকার দশার বৈশিষ্ট্য হল কার্বন ডাইঅক্সাইডের সংযোজন এবং শর্করা উৎপাদন। বিজ্ঞানী ব্ল্যাকম্যান (Blackmann 1905) প্রথম অন্ধকার বিক্রিয়াটি লক্ষ করেন বলে একে ব্ল্যাকম্যান বিক্রিয়াও বলে। অন্ধকার দশার প্রধান উপাদানগুলি হল CO2, RuBP, NADPH এবং ATP। এই বিক্রিয়ার পর্যায়গুলি নিম্নরূপ —
1. অঙ্গার আত্তীকরণ (Carbon assimilation) : এই পর্যায়ে কোশস্থ পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা যৌগ রাইবিউলোজ বিস্-ফসফেট (RuBP) গ্রাহকরূপে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে 3-কার্বনযুক্ত স্থায়ী যৌগ ফসফোগ্লিসারিক অ্যাসিড (PGA) তৈরি করে। CO2 থেকে কার্বনের কোশস্থ যৌগে অঙ্গীভূত হওয়াকে অঙ্গার আত্তীকরণ (Carbon assimilation) বলে।
2. ফসফোগ্লিসারালডিহাইড গঠন (Formation of Phosphoglyceraldehyde) : ফসফোগ্লিসারিক অ্যাসিড আলোক দশায় উৎপন্ন NADPH এবং উৎসেচকের সহায়তায় বিজারিত হয়ে 3-কার্বনযুক্ত ফসফোগ্লিসারালডিহাইড (PGAld) গঠন করে এবং NADP+ মুক্ত করে।
3. গ্লুকোজ সংশ্লেষ (Formation of Glucose) : 12 অণু PGAld-এর মাত্র 2 অণু PGAld, ATP-এর সাহায্যে এক অণু গ্লুকোজ (6-C যুক্ত) উৎপন্ন করে। পরে এই গ্লুকোজ থেকে অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট প্রভৃতি সঞ্চয়ী পদার্থ উৎপন্ন হয়।
4. রাইবিউলোজ বিস্-ফসফেটের পুনরুৎপাদন (Re-formation of RuBP) : গুরুত্বপূর্ণ এই পর্যায়ে বাকি 10 অণু PGAld একটি চক্রের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমিক কতকগুলি অন্তর্বর্তী যৌগ তৈরির দ্বারা পুনরায় 6 অণু RuBP-তে পুনর্গঠিত হয় এবং পরবর্তীকালে আবার শর্করা গঠনে সহায়তা করে। বিজ্ঞানী কেলভিন (Calvin - 1956) প্ৰদৰ্শিত এই চক্রের নাম কেলভিন চক্র (Calvin cycle)।
আলোক দশা | অন্ধকার দশা |
---|---|
1. সূর্যালোকের প্রয়োজন হয়। | 1. সূর্যালোকের প্রয়োজন হয় না। |
2. ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানা অঞ্চলে ঘটে। | 12. ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমা অঞ্চলে ঘটে। |
3. অক্সিজেন নির্গত হয়। | 3. অক্সিজেন নির্গত হয় না। |
4. NADP বিজারিত হয়। | 4. বিজারিত NADP জারিত হয়। |
5. কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষিত হয় না। | 5. কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষিত হয়। |
6. গ্লুকোজ উৎপন্ন হয় না। | 6. গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। |
চক্রাকার ফসফোরাইলেশন | অচক্রাকার ফসফোরাইলেশন |
---|---|
1. জলের প্রয়োজন হয় না। | 1. জলের প্রয়োজন হয়। |
2. অক্সিজেন উৎপন্ন হয় না। | 2. অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। |
3. NADP-র কোনো ভূমিকা নেই। | 3. NADP বিজারিত হয়। |
4. প্রতি চক্রে 2 অণু ATP উৎপন্ন হয়। | 4. মাত্র এক অণু ATP উৎপন্ন হয়। |
- সালোকসংশ্লেষ Study Notes
- শ্বসন নোটস Study Notes
- পুষ্টি নোটস Study Notes
- সংবহন নোটস Study Notes
- চলন ও গমন নোটস Study Notes
- রেচন নোটস Study Notes
- স্নায়ুতন্ত্র নোটস Study Notes
- জ্ঞানেন্দ্রিয় নোটস Study Notes
- হরমোন নোটস Study Notes
- কোশ ও কোশ বিভাজন Study Notes
- জনন Study Notes
- বংশগতি Study Notes
- অভিব্যক্তি Study Notes
- অভিযোজন Study Notes
- ভাইরাস Study Notes
- মাইক্রোবস্ Study Notes
- রোগ ও স্বাস্থ্য Study Notes
- পরিবেশ Study Notes
- বাস্তুতন্ত্র Study Notes
- সংরক্ষণ Study Notes