Class x life science suggestion | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান ফাইনাল সাজেশন


মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান ফাইনাল সাজেশন | Madhyamik Life Science Chapter : 5  (Mark : 2) Question Answer

✱ গ্রিনহাউস এফেক্ট কাকে বলে ?
➛ CO2, CH4, CFC, N2O প্রভৃতি দূষক গ্যাসগুলি পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত তাপ শোষণ করে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। এই ঘটনাকে গ্রিনহাউস এফেক্ট বলে।

✱ দূষক কাকে বলে?
➛  যে সকল পদার্থের উপস্থিতি পরিবেশে অবাঞ্ছিত পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং যার ফলে সমগ্র জীবজগৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাকে দূষক বলে। যেমন—ধুলো-বালি, ময়লা, আবর্জনা, CO2, NO2, SO2, সিসা, পারদ ইত্যাদি ।

✱ জীবজ নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণ বলতে কী বোঝ?
➛ নীলাভ-সবুজ শৈবাল বা সায়ানোব্যাকটেরিয়া এবং কিছু বিশেষ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া, বাতাসের নাইট্রোজেনকে বিশেষ উৎসেচক, নাইট্রোজিনেজ-এর সাহায্যে বিজারিত করে অ্যামোনিয়ায় পরিণত করে এবং প্রোটোপ্লাজমে অঙ্গীভূত করে। একে জীবজ নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণ (biological nitrogen fixation) বলে।

✱ বজ্রপাতের সঙ্গে নাইট্রোজেন চক্রের সম্পর্ক কী?
অথবা, নাইট্রোজেনের প্রাকৃতিক আবদ্ধকরণ বলতে কী বোঝ?
➛ বজ্রপাতের সময়ে বাতাসের নাইট্রোজেন গ্যাস অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাইট্রিক অক্সাইড (NO) ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO2) গঠন করে। এই NO2 বৃষ্টির জলে নাইট্রাস অ্যাসিড (HNO2) বা নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3) রূপে মিশে মাটিতে নেমে আসে। এভাবে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণ ঘটে।

✱ অ্যামোনিফিকেশন কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
➛ যে পদ্ধতিতে বিভিন্ন জীবাণুর দ্বারা উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ অথবা প্রাণীর নাইট্রোজেনযুক্ত যৌগ অ্যামোনিয়ায় রূপান্তরিত হয়, তাকে অ্যামোনিফিকেশন বলে। উদাহরণ:  (ব্যাসিলাস মাইকয়ডিস) এবং Micrococcous (মাইক্রোকক্কাস) প্রভৃতি অ্যামোনিফাইং ব্যাকটেরিয়া এই পদ্ধতি সম্পন্ন হতে সাহায্য করে।

✱ নাইট্রিফিকেশন কাকে বলে? 
➛ যে পদ্ধতিতে বিভিন্ন জীবাণুর দ্বারা মৃত্তিকাস্থিত অ্যামোনিয়া, নাইট্রাইটে ও তারপর নাইট্রেটে রূপান্তরিত হয়, তাকে নাইট্রিফিকেশন বলে। বিভিন্ন নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া, যেমন — Nitrosomonas (নাইট্রোসোমোনাস) এবং Nitrobacter (নাইট্রোব্যাকটর) এই পদ্ধতিটি সম্পন্ন করে।

✱ লেগহিমোগ্লোবিন কী? এর গুরুত্ব কী?
অথবা,লেগ হিমোগ্লোবিন কোথায় থাকে?
➛ লেগহিমোগ্লোবিন হল শিম্বগোত্রীয় উদ্ভিদের নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী অর্বুদে উপস্থিত গোলাপি বর্ণের রঙ্গক পদার্থ, যা রাসায়ানিকভাবে হিমোগ্লোবিন সদৃশ
গুরুত্ব: এই রঙ্গকটি অর্বুদ, ব্যাকটেরয়েড এবং তার চারাপাশের পোষক কোশের কোশপর্দার মধ্যবর্তী স্থানে থাকে। এই রঙ্গকটি হল অক্সিজেন গ্রাহক, যা মুক্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে।

✱ নাইট্রোজেন চক্রের গুরুত্ব কী?
➛ ① নাইট্রোজেন চক্রের মাধ্যমে পরিবেশে নাইট্রোজেনের ভারসাম্য রক্ষিত হয়।② জীবদেহের কোশ গঠনের জন্য যে নাইট্রোজেনের প্রয়োজন হয়, তা নাইট্রোজেন চক্রের দ্বারা জীবদেহে পরিবাহিত হয়। ফলে জীবজগতের অস্তিত্ব বজায় থাকে।

✱ ‘দূষণ জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণ'—ব্যাখ্যা করো। 
অথবা, “বিশ্ব উন্নায়ন জীববৈচিত্র্যে কী প্রভাব ফেলবে তা উদাহরণসহ লেখো।
➛ পৃথিবীর উন্নায়নের ফলে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির 4 টি উদাহরণ হল— ① অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সংলগ্ন প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য হ্রাস। ② পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা 1°C-2°C বৃদ্ধির ফলে উত্তর মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ায় আজ মেরু ভল্লুক খাদ্যের অভাবে সংকটাপন্ন, তেমনই সিন্ধুঘোটক, মেরু শেয়াল, পেঙ্গুইন প্রভৃতিও বিপদগ্রস্ত। ③ বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ক্ষতি করছে। ④ বিশ্ব উন্নায়নের ফলে বিভিন্ন মাছের প্রজাতি, ওয়ালরাস, পরিযায়ী পাখি, শামুক-ঝিনুকের প্রজাতি, উভচরেরা আজ বিপদের সম্মুখীন।

✱ পশ্চিমঘাট ও শ্রীলঙ্কা-কে বায়োডাইভারসিটি হটস্পট বলার কারণ কী?
অথবা, পশ্চিমঘাট-শ্রীলঙ্কা হটস্পটে পাওয়া যায় এমন জীববৈচিত্র্যের উদাহরণ দাও।
➛ পশ্চিমঘাট ও শ্রীলঙ্কা অংশে প্রায় 5000 প্রজাতির সংবহনকলাযুক্ত উদ্ভিদ জন্মায়, যাদের মধ্যে 1700টি প্রজাতি এনডেমিক এছাড়া, প্রাণীদের মধ্যে 140টি স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে 20টি প্রজাতি এনডেমিক। পাখির ক্ষেত্রে 450টি প্রজাতির মধ্যে 35টি প্রজাতি এনডেমিক। সরীসৃপের ক্ষেত্রে 260টি প্রজাতির মধ্যে 175টি প্রজাতি এবং উভচরের ক্ষেত্রে 135টি প্রজাতির মধ্যে 130টি প্রজাতি এনডেমিক। এখানে Magnolia nilagirica (ম্যাগনোলিয়া নিলাগিরিকা), Ixora elongata (ইক্সোরা ইলংগাটা) প্রভৃতি উদ্ভিদ এবং মালাবার লার্জ-স্পটেড সিভেট ও লায়ন-টেল্ড ম্যাকাক ইত্যাদি প্রাণীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। 

✱ ইন্দো-বার্মা অংশে ভারতের কোন কোন রাজ্য অন্তর্ভুক্ত?
➛ ইন্দো-বার্মা অংশে ভারতের যে সকল রাজ্য অন্তর্ভুক্ত সেগুলি হল—মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ ও দক্ষিণ অসম।

✱ সুন্দাল্যান্ড হটস্পটের অবস্থান ও এর জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতির নাম লেখো।
➛ সুন্দাল্যান্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুমাত্রা ও বোর্নিও এবং ভারতের নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত। সুন্দাল্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি হল—সুন্দরী গাছ (উদ্ভিদ) অথবা ওরাংওটাং (প্রাণী)।

✱ 'কনজারভেশন ইনটারন্যাশনাল' সংস্থা একটি অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের হটস্পট-রূপে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কোন দুটি শর্ত তুলে ধরেছে? অথবা, কোনো অঞ্চলকে কখন হটস্পট বলে গণ্য করা হয়? অথবা, দুটি অঞ্চলের মধ্যে একটিকে জীববৈচিত্র্য হটস্পট বলে ঘোষণা করতে চাইলে কী কী শর্ত তুমি বিবেচনা করবে ?
➛ পরিবেশ-সংক্রান্ত সংস্থা 'কনজারভেশন ইনটারন্যাশনাল', একটি অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের হটস্পট-রূপে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যে দুটি শর্ত তুলে ধরেছে, সেগুলি হল— ① নির্দিষ্ট হটস্পট অঞ্চলে অন্তত 1500টি সংবহনকলাযুক্ত এনডেমিক উদ্ভিদ প্রজাতির অস্তিত্ব থাকতে হবে। ② হটস্পট অঞ্চলের আদি বাসিন্দাদের অন্তত 70% প্রজাতিই বিলুপ্ত হয়ে গিয়ে থাকতে হবে।

✱ পূর্ব হিমালয়কে ‘বায়োডাইভারসিটি হটস্পট' বলার কারণ কী?
অথবা, পূর্ব হিমালয় হটস্পটে পাওয়া যায় এমন জীববৈচিত্র্যের উদাহরণ দাও। 
➛ পূর্ব হিমালয় বহু এনডেমিক প্রজাতির উৎপত্তিস্থল। এখানে প্রায় 5800 প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। এদের মধ্যে 2000টি প্রজাতি এনডেমিক। এখানে 45টি স্তন্যপায়ী, 50 টি পাখি, 17টি সরীসৃপ এবং 36টি উদ্ভিদ প্রজাতিসহ মোট 163টি বিপন্ন প্রজাতি বাস করে। এখানে কলসপত্রী (উদ্ভিদ), একশৃঙ্গ গন্ডার, সোনালি লেঙুর (প্রাণী) ইত্যাদি জীব বেশি দেখা যায়।

✱ এনডেমিক প্রজাতি কাকে বলে?
➛ যে উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বাস করে, তাকে ওই অঞ্চলের এনডেমিক প্রজাতি বলে। যেমন— ভারতীয় সিংহ (গির), মুগা রেশম মথ (অসম)।

✱ মানব সভ্যতার বিকাশে নিম্নলিখিত দুটি ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্যের ভূমিকা উল্লেখ করো।
① খাদ্য উৎপাদন, ② ওষুধ প্রস্তুতি।
① খাদ্য উৎপাদন : মানুষসহ সকল জীব তার খাদ্যের জন্য সরাসরি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। জীববৈচিত্র্যের জন্যই মানুষ তার ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন খাদ্য-উপাদান, যেমন—ভিটামিন, খনিজ লবণ ও শক্তি-সমৃদ্ধ খাদ্যের সৃষ্টির মাধ্যমে, পুষ্টিতে মানবসমাজকে সাহায্য করে জীববৈচিত্র্য। এ ছাড়া খরা, বন্যা রোগ প্রতিরোধী শস্য জীববৈচিত্র্যের ফলেই সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। মাছ ও জলজ প্রাণী, পোলট্রি পাখি, মাংস ও দুধ উৎপাদক প্রাণীবৈচিত্র্য সামগ্রিকভাবে পৃথিবীর খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 

② ওষুধ প্রস্তুতি : চিকিৎসায় ব্যবহৃত বহু ওষুধ হল জীবজাত। সিনকোনা গাছের ছাল থেকে তৈরি কুইনাইন ম্যালেরিয়ার ওষুধরূপে, সর্পগন্ধা গাছের মূলের ছাল থেকে প্রাপ্ত রেসারপিন উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ তৈরিতে, ধুতুরা ফলের বীজ থেকে প্রাপ্ত ডাটুরিন হাঁপানির ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় । তুলসী, কালমেঘ, নিম প্রভৃতি ভেষজ উদ্ভিদগুলিও বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতিতে সাহায্য করে। Penicilium notatum (পেনিসিলিয়াম নোটেটাম)সহ অন্যান্য উপকারী ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া এবং বিভিন্ন প্রাণীজ উপাদানও ওষুধ প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়।

✱ অ্যাসবেসটোসিস কী?
➛ অ্যাসবেসটসের কণা ফুসফুসে ঢুকে শ্বাসতন্ত্রের যে রোগ সৃষ্টি করে তাকে অ্যাসবেসটোসিস বলে। এর ফলে ফাইব্রোসিস ও প্লুরা পর্দার ক্যানসার হতে পারে।

✱ ব্রংকাইটিসের রোগ লক্ষণগুলি লেখো। 
➛ ব্রংকাইটিসের রোগ লক্ষণগুলি হল— ① কাশি ও শ্বাসকষ্ট, ② ক্লান্তি, ③ স্বল্প জ্বর ও ঠান্ডাবোধ, ④ বুকে চাপ ধরা অর্থাৎ দমবন্ধভাব।

✱ মানুষের ফুসফুস ক্যানসারের একটি কারণ ও একটি উপসর্গ লেখো।
অথবা, ক্যানসারের জন্য দায়ী মানবসৃষ্ট কারণগুলি লেখো।
➛ ফুসফুস ক্যানসারের কারণ হল—মানুষের ফুসফুস ক্যানসারের একটি কারণ হল ধূমপান। তামাকজাত ধোঁয়ায় ফরম্যালডিহাইড, অ্যাসিট্যালডিহাইড প্রভৃতি কারসিনোজেন থাকে। এছাড়াও দূষিত পরিবেশে দীর্ঘদিন বসবাস করার ফলেও ফুসফুসের ক্যানসার হতে পারে। ফুসফুস ক্যানসারের উপসর্গ হল—এই রোগে অনবরত কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত নির্গমন ঘটে থাকে। তা ছাড়াও গলায় ঘরঘর শব্দ, শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা, নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিস সংক্রমণও ঘটে থাকে।

✱ কারসিনোজেন কী ?
➛ যে সকল ভৌত বা রাসায়নিক পদার্থ বা রশ্মি, কোশের DNA-র মধ্যে স্থায়ী পরিবর্তন ঘটানোর মাধ্যমে ক্যানসার সৃষ্টিতে সক্ষম হয়, তাকে কারসিনোজেন বলে। এটি হল একপ্রকার মিউটাজেন (মিউটেশন ঘটাতে সক্ষম পদার্থ)।

✱ জলাশয়কে ‘প্রকৃতির বৃক্ক’ বলা হয় কেন?
➛ জলাশয় পরিবেশের দূষকগুলি থিতিয়ে, পরিস্রাবণ করে পরিবেশকে পরিশ্রুত রাখে। বৃক্ক যেমন রক্তকে পরিশ্রুত করে দেহকে সুস্থ রাখে, জলাশয়ও তেমনি স্থানীয় পরিবেশের দূষক হ্রাস করে। এছাড়া বর্ষাকালে অতিরিক্ত জল সংগ্রহ করে ও গ্রীষ্মে জলের জোগান দিয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখে।

✱ অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণগুলি কী কী? 
➛ অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণগুলি হল— ① পরিবেশগত কারণ: বিভিন্ন প্রাকৃতিক অ্যালারজেন-এর সংস্পর্শে রোগটি বৃদ্ধি পায়, যেমন—প্রাণীর মল, উদ্ভিদের পরাগরেণু, ধুলো ও ছত্রাক। এ ছাড়া, বিভিন্ন গৌণ দূষক, যেমন—ওজোন, ফরম্যালডিহাইড, PAN প্রভৃতি অ্যালারজেনের প্রভাব বাড়িয়ে দিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ বৃদ্ধি করে। ② মনুষ্যসৃষ্ট কারণ: কলকারখানা বা গৃহে কয়লা, তেলের দহনে সৃষ্ট ধোঁয়া, কলকারখানায় সৃষ্ট সালফার ডাইঅক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড ইত্যাদি।

✱ ক্রমাগত জলাভূমি ধ্বংস ও কৃষিজমির পরিমাণ হ্রাসের পরিবেশগত পরিণাম কী কী হতে পারে?
➛ জলাভূমি ধ্বংসের পরিবেশগত পরিণাম হল— ① জলাভূমিতে যে জলজ জীবগুলি বসবাস করে যেমন—জলজ গাছ, মাছ, ব্যাং, সাপ ইত্যাদি তাদের বৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে। ② পৃথিবীব্যাপী জলের অভাব দেখা দিচ্ছে। ③ স্থানীয় আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। কৃষি জমির পরিমাণ হ্রাসের পরিবেশগত পরিণাম হল— ① উৎপাদিত খাদ্যশস্যের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে ও খাদ্যের অভাব প্রকট হয়ে উঠছে। ② স্বল্প পরিমাণ জমিতে অধিক ফসল উৎপাদনের প্রচেষ্টায় জমিতে রাসায়নিক সার অধিক মাত্রায় ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এছাড়াও অধিক জল সেচের ফলে জলের অভাব দেখা দিচ্ছে।

✱ মানব জনসমষ্টি বা পপুলেশনের সংজ্ঞা দাও।
➛ একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের মোট সংখ্যাকে মানব জনসমষ্টি বলা হয় ৷

✱ আদমশুমারি কাকে বলে?
➛ জনগণনা এবং জনগণনা-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের কাজকে বলে আদমশুমারি। ভারতে প্রতি 10 বছর অন্তর জনগণনা করা হয়। ভারতে সর্বশেষ জনগণনা করা হয় 2011 সালে।

✱ নিম্নলিখিত দূষকগুলির ক্ষতিকারক প্রভাব তালিকাভুক্ত করো—গ্রিনহাউস গ্যাস, SPM, কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার, অভঙ্গুর রাসায়নিক কীটনাশক।
➛ বিভিন্ন দূষকের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি হল — ① গ্রিনহাউস গ্যাস : বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং। ② SPM:  মানুষের শ্বাসতন্ত্রে জ্বালা ও শ্বাসকষ্ট। ③ কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার : ইউট্রোফিকেশন ও জৈবসঞয়ন। ④ অভঙ্গুর রাসায়নিক কীটনাশক : জৈবসয়ন ও জীববিবর্ধন

✱ শব্দদূষণ বলতে কী বোঝ ?
➛ উচ্চ প্রাবল্য ও উচ্চ তীব্রতা সহনসীমার ঊর্ধ্বের সুরবর্জিত কর্কশ যে শব্দ মানবদেহে ক্ষতিকর ও অবাঞ্ছনীয় পরিবর্তন ঘটিয়ে থাকে, তাকে শব্দদূষণ বলে। যেমন—বাজির শব্দ, মাইক্রোফোনের উচ্চ শব্দ, যানবাহন-জাত তীব্র শব্দ ইত্যাদি।

✱ শব্দদূষণ মানব শরীরে কান ও হৎপিণ্ডের ওপর কী কী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে?
➛ কানের ওপর প্রভাব—দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ শব্দ (100 dB)-এর কারণে অন্তঃকর্ণের অর্গান অফ কর্টির কোশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পায় বা বিনষ্ট হয় । একে ‘নয়েস ইনডিউস্ড হিয়ারিং লস’বলে। হৃৎপিণ্ডের ওপর প্রভাব — 90dB-এর ঊর্ধ্বে শব্দ হলে সিস্টোলিক রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন হার বৃদ্ধি পায়। অনবরত 60dB-এর ঊর্ধ্বে শব্দ শুনলে হৃৎপিণ্ডের মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন নামক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এই রোগে হৃদপেশিতে আংশিকভাবে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গিয়ে পেশির কার্যকারিতা বিনষ্ট হয়।

✹ মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান ফাইনাল সাজেশন (Mark-2)
  • অভিব্যক্তি ও অভিযোজন 
  • পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ 
  • জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় 
  • জীবনের প্রবহমানতা 
  • বংশগত এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ 

❏ আরো পড়ুন :  Class 10 Life Science MCQ
  • অভিব্যক্তি ও অভিযোজন MCQ
  • পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ MCQ
  • জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় MCQ
  • জীবনের প্রবহমানতা MCQ
  • বংশগত এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ MCQ

✱ অ্যালগাল ব্লুম কাকে বলে?
➛ স্বাদু জল বা সামুদ্রিক লবণাক্ত জলে শৈবালের অতিবৃদ্ধি ঘটে জলের বর্ণ সবুজ হয়ে যায় ও ওই জলের বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট হয়। একে অ্যালগাল ব্লুম বলে। ইউট্রোফিকেশনে অ্যালগাল ব্লুম ঘটে থাকে।

COD বলতে কী বোঝ? এটি দূষণ নির্দেশকরূপে কীভাবে কাজ করে? 
➛ জলের জৈব উপাদানের পচন ও অজৈব রাসায়নিক, যেমন : অ্যামোনিয়া ও নাইট্রাইটের জারণে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন মাত্ৰা নির্দেশ করে COD বা কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড। এটি জলে উপস্থিত জৈব ও অজৈব দূষক মাত্রা নির্দেশ করে। এর মান বৃদ্ধির অর্থ জলে দূষণ মাত্রা বৃদ্ধি

✱ জৈব অক্সিজেন চাহিদা বা BOD বলতে কী বোঝ?
➛ কাগজ শিল্প, খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্প, চর্মশিল্প প্রভৃতির উপজাত দ্রব্য ও গৃহস্থালির উপজাত দ্রব্যে প্রচুর পরিমাণে জৈব পদার্থ থাকে। এগুলি জলে মিশে বিভিন্ন অণুজীবের সংখ্যার অত্যধিক বৃদ্ধি ঘটায়। এতে জলে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পায়। এর ফলস্বরূপ জলে অক্সিজেনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনাকে জৈব অক্সিজেন চাহিদা বা BOD (Biological Oxygen Demand) বলে।

✱ জীববিবর্ধন বা জৈববিবর্ধন (biomagnification) কাকে বলে?
➛ যে পদ্ধতিতে পরিবর্তনহীন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করে এবং প্রতিটি খাদ্যস্তরের অন্তর্ভুক্ত জীবদেহে এর ঘনত্বের পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বহুগুণ বৃদ্ধি পায়, তাকে জীববিবর্ধন বা জৈববিবর্ধন বা বায়োম্যাগনিফিকেশন বলে।

✱ অ্যাসিড বৃষ্টির রাসায়নিক উপাদানগুলি লেখো।
➛ অ্যাসিড বৃষ্টির রাসায়নিক উপাদানগুলি হল— [i] সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), [ii] নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3), [iii] কার্বনিক অ্যাসিড।(H2CO3)।

✱ অ্যাসিড বৃষ্টিতে তাজমহল বা অন্য মার্বেল নির্মিত স্থাপত্যের ক্ষতি হয় কীভাবে?
➛ মার্বেল, চুনাপাথর প্রভৃতি প্রকৃতপক্ষে হল ক্যালশিয়াম কার্বনেট (CaCO3)। এটি অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সালফেট বা নাইট্রেট যৌগ উৎপন্ন করে যা স্থাপত্যের উজ্জ্বলতা ম্লান করে দেয়। এছাড়া পাথর ক্ষয়ে সৌন্দর্যহানি ঘটে, যাকে স্টোন লেপ্রসি বলে।

✱ ওজোন হোল বা ওজোন গহ্বর কী?
➛ মানব ক্রিয়াকলাপজনিত কারণে সৃষ্ট ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, হ্যালোন প্রভৃতি গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর বিনাশ করে তাতে গহবর সৃষ্টি করে। একে ওজোন হোল বলে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এভাবে ওজোন স্তরের ক্রমশ ঘনত্ব বিনষ্ট হওয়াকে বলে ওজোন স্তরের বিনাশ (ozone depletion)।

✱ ওজোন হোলের ক্ষতিকর প্রভাব লেখো।
➛ ওজোন হোলের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি হল—① ওজোন হোল সৃষ্টি হলে সূর্যালোকের UV রশ্মি (UVA) পৃথিবীপৃষ্ঠে নেমে এসে ত্বকের ক্যানসার, ছানি প্রভৃতি রোগ সৃষ্টি করে। ② UV রশ্মির প্রভাবে সায়ানোব্যাকটেরিয়া বিনষ্ট হয়, ফলে ধান উৎপাদন অতিমাত্রায় ব্যাহত হয়।

✱ ইউট্রোফিকেশন কাকে বলে ?
➛ জলদূষণজনিত কারণে জলাশয়ে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান সৃষ্টির মাধ্যমে প্ল্যাঙ্কটনের সংখ্যার অত্যধিক বৃদ্ধি ঘটে, যার ফলে জলের গুণমানের ঘাটতি দেখা যায়, একে ইউট্রোফিকেশন বলে।

SPM বা PM কাকে বলে? এর উপাদানগুলি কী কী?
অথবা, SPM-এর উদাহরণ দাও।
➛ শিল্প, দহন, প্রাকৃতিক উৎসজাত বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম কঠিন বা তরল কণাকে SPM বা সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার বলে।  উপাদান: ভারী ধাতু, তেলের ধোঁয়া কণা, ফ্লাইঅ্যাশ, অণুজীব, পরাগরেণু, সিমেন্টের ধুলো, ধুলো, প্রভৃতি।

✱ রেড ডাটা বুক কাকে বলে?
IUCN নামক বিশ্বসংস্থা পৃথিবীর বিপদগ্রস্ত জীবগুলির সংরক্ষণের স্বার্থে ওই জীবগুলির একটি তালিকা বা লিস্ট প্রকাশ করে ৷ একে রেড লিস্ট বা রেড ডাটা বুক বলে। সমস্ত জীবকে এই লিস্টে মোট ৭টি শ্রেণিতে বিভক্ত করে শ্রেণি ভাগ করা হয়। যেমন—অবলুপ্ত (extinct), বিপন্ন (endangered), সংকটাপন্ন (vulnerable) প্রভৃতি।

✱ “গ্রিন ডাটা বুক’কী ?
➛ এটি একটি ছোটো পরিবেশসংক্রান্ত তথ্য-সমৃদ্ধ পকেটবুক যাতে 200টিরও বেশি দেশের কৃষি, বনজসম্পদ, জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যায়। এটি প্রতিবছর বিশ্ব ব্যাংক প্রকাশ করে থাকে। 

✱ একটি বিপন্ন সরীসৃপ প্রজাতির সংরক্ষণের জন্য ইন-সিঁটু সংরক্ষণ ব্যবস্থাগুলি লেখো এবং পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত এরকম একটি সংরক্ষণ স্থানের নাম লেখো।
➛ একটি বিপন্ন সরীসৃপ প্রজাতি হল কুমির। কুমিরের ইন-সিটু সংরক্ষণ ব্যবস্থাগুলি হল – ① কুমিরের প্রজননের জন্য অভয়ারণ্য তৈরি ও তার পরিচালন। ②  ক্যাপটিভ ব্রিডিং দ্বারা অভয়ারণ্যে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ তৈরি ও প্রজননে সাহায্য করা। ও চোরাশিকার ও কুমিরের ডিম সংগ্রহ প্রতিরোধ করা। পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত একটি সংরক্ষণ স্থান হল—ভগবতপুর কুমির প্রকল্প, সুন্দরবন।

✱ গঙ্গা নদীতে ঘড়িয়ালের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ লেখো।
➛ ঘড়িয়ালের সংখ্যা কমার কারণগুলি হল –① ঘড়িয়ালের খাদ্য হল মাছ, গঙ্গা নদীতে দূষণের কারণে মাছের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ফলে প্রাণীটি খাদ্যের অভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে। ② মাছধরার জালে ধরা পড়লে তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে। ③ চাষে অতিরিক্ত জল ব্যবহার, বাঁধ নির্মাণ প্রমুখ কারণে এদের বাসস্থান কমে আসছে।

✱ গির অরণ্যে সিংহ সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত পদক্ষেপ প্রস্তাব করো। অথবা, সিংহ সংরক্ষণের জন্য ভারতবর্ষের গির জাতীয় উদ্যানে যে যে ইন-সিটু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করো।
➛ ① গির অরণ্যে বন্য উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা। এর ফলে সিংহের বাসস্থান ও খাদ্যের জোগান বজায় থাকে। ② চোরাশিকার বন্ধ করা। ③ কৃষিজমি রক্ষার্থে যে বৈদ্যুতিক বেড়া ব্যবহার করা হয়, তা বন্ধ করা। উন্মুক্ত কুয়োতে পড়ে যাতে সিংহের আর মৃত্যু না হয়, তার ব্যবস্থা করা। ④ প্রজনন কেন্দ্রে প্রজনন প্রকল্প পরিচালনা করা।

✱ প্রজেক্ট টাইগারের উদ্দেশ্য কী ছিল? 
➛ ① বাঘের বাসস্থান কমার কারণগুলি দূর করা। ② বাঘের পপুলেশন বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা প্রজেক্ট টাইগার একটি সফল উদ্যোগ। 1970 নাগাদ ভারতীয় বাঘের সংখ্যা ছিল 1200 যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় 2226 হয়েছে (2014 সেনসাস)।

✱ ভারতীয় একশৃঙ্গ গন্ডারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য দুটি সংরক্ষণ-সংক্রান্ত পদক্ষেপ প্রস্তাব করো।  
➛ গন্ডার সংরক্ষণে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি হল— ① গন্ডারের জন্য বাসস্থান সুনিশ্চিত করা ও তাদের খাদ্য ও পানীয়ের যথেষ্ট জোগানের ব্যবস্থা করা। ② গন্ডারের প্রজননের ব্যবস্থা করা, সম্ভব হলে 'ক্যাপটিভ ব্রিডিং এর মাধ্যমে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টা করা। ③  জনগণের মধ্যে লন্ডার সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।

✱ পিপলস্ বায়োডাইভার্সিটি রেজিস্টার (PBR)-এ জীববৈচিত্র্য-সংক্রান্ত যে প্রধান বিষয়গুলি লিপিবদ্ধ করা হয় তা লেখো।
PBR-এ যে সমস্ত বিষয়ে তথ্য মজুত করা থাকে তা হল— ① সমস্ত স্থানীয় প্রজাতি সম্পর্কে সামগ্রিক তথ্য। ② প্রজাতির বাসস্থান। ③ প্রজাতির থেকে প্রাপ্ত জৈবিক উৎপাদন (বা সম্পদ) সম্বন্ধে ধারণা, তাদের বাজারমূল্য, সংগ্রহের সময়, সংগ্রহের নিয়ম ও তাদের পরিবহণ পদ্ধতি। ④ প্রজাতিজাত উৎপাদনের প্রক্রিয়াকরণের প্রযুক্তি। ⑤ প্রজাতিজাত সম্পদের স্থানীয় ব্যবহার এবং পরিচালন পদ্ধতি। ⑥ স্থানীয় ভৌগোলিক তথ্য। ⑦ বিপন্ন প্রজাতি নির্ণয় ও স্থানীয় মানুষদের তরফ থেকে প্রজাতি সংরক্ষণের ধারণা ও উদ্যোগ। ⑧ স্থানীয় প্রজাতিগুলি সম্বন্ধে ঐতিহ্যবাহী, পরম্পরাগত ও বিশ্বাস-সংক্রান্ত তথ্য।

✱ ক্রায়োসংরক্ষণ বলতে কী বোঝ? 
➛ ক্রায়োসংরক্ষণ হল একটি এক্স-সিটু সংরক্ষণ প্রক্রিয়া যাতে কোশ, কলা বা অন্য কোনো সজীব দেহাংশ তরল নাইট্রোজেনে প্রায় 196°C তাপমাত্রায় রেখে দীর্ঘদিন জীবিত রাখা হয়।

✱ পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত একটি ন্যাশনাল পার্ক ও একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের উদাহরণ দাও।
➛ পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত একটি ন্যাশনাল পার্ক হল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান ও একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হল সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।

✱ এক্স-সিটু সংরক্ষণ বলতে কী বোঝ ? উদাহরণ দাও।
➛ কোনো জীবকে সংরক্ষণের জন্য বিশেষ সুরক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন হয়, যা তার নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে সম্ভব নয়, তখন সেই জীবকে তার প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। এই ধরনের সংরক্ষণকে এক্স-সিটু সংরক্ষণ বলে। উদাহরণ: বোটানিক্যাল গার্ডেন-এ উদ্ভিদ সংরক্ষণ করা।

✱ এক্স-সিটু সংরক্ষণের সুবিধা কী কী?
➛ এক্স-সিটু সংরক্ষণের সুবিধাগুলি হল— ① কোন প্রজাতি বিপন্ন হলে তার সুচিকিৎসা, সংরক্ষণ ও প্রজনন এক্স-সিটু সংরক্ষণ দ্বারা সম্ভব হয়। ② কোনো প্রজাতি বিলুপ্তপ্রায় হলে সম্পূর্ণ বিলুপ্তির আগে তার জনন উপাদান (জননকোশ বা রেণু) ক্রায়োসংরক্ষণ দ্বারা সংরক্ষিত করে ভবিষ্যতে জীব তৈরি সম্ভব হয়।

✱ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
➛ যে বিশেষ বনাঞ্চলে জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণের জন্য বহুমুখী ব্যবহারের উপযোগী জমি অঞ্চলভিত্তিক ও নির্দিষ্ট ক্রিয়াকর্মভিত্তিক কতকগুলি নির্দিষ্ট অংশে ভাগ করা হয়, তাকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ বলে। উদাহরণ: পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন ও তামিলনাড়ুর নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।

✱ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের অংশগুলি ব্যাখ্যা করো।
অথবা, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের বৈশিষ্ট্য বলো।
অথবা,কোর অঞ্চল কাকে বলে? বাফার জোন কী? ট্রানজিশন অঞ্চল বলতে কী বোঝ?
➛ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সুবিধার জন্য বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়। এগুলি হল— ① কোর অঞ্চল: বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের কেন্দ্রে অবস্থিত সংরক্ষিত অংশকে কোর অঞ্চল বলে। এই অঞ্চলে জীবের প্রজনন সাধিত হয় ও এই অঞ্চলের ইকোসিস্টেম অন্য অঞ্চলগুলিতে স্থাপন করার চেষ্টা করা হয়। এই অঞ্চলে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ② বাফার অঞ্চল: কোর অঞ্চলকে ঘিরে অঞ্চল অবস্থিত যেখানে মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত। এই অঞ্চলে নিয়ন্ত্রিত পর্যটন, গবেষণা প্রভৃতি কাজ করা হয়। ③ ট্রানজিশন অঞ্চল বা ‘এরিয়া অফ কো-অপারেশন': স্থানীয় বাসিন্দা ও সংরক্ষণ কর্মীরা এই অঞ্চলে থাকেন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের চেষ্টা করেন। এই অঞ্চলের বনজ উপাদান পরিমিতভাবে ব্যবহার করা যায়।

✱ অভয়ারণ্য বা স্যাংচুয়ারি কাকে বলে? দুটি উদাহরণ দাও।
➛ রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এমন একটি বনাঞ্চল যেখানে আইনের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী হত্যা বা শিকার করা এবং জনসাধারণের প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ, তাকে অভয়ারণ্য বলে। কিন্তু গবেষণার স্বার্থে অনুমতি সাপেক্ষে অভয়ারণ্যে প্রবেশাধিকার লাভ করা যায়। উদাহরণ: পশ্চিমবঙ্গের চাপড়ামারি ও ঝাড়খণ্ডের পালামৌ অভয়ারণ্য।

✱ মানুষের জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধির কারণে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয় এমন দুটি উদাহরণ দাও।
➛ মানুষের জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধির কারণে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয় তা নীচের উদাহরণ দুটি থেকে বোঝা যায়। ① অরণ্য বিনাশ: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সুমাত্রা প্রভৃতি দেশে পাম তেল উৎপাদনের বৃদ্ধির জন্য পাম গাছ চাষের উদ্দেশ্যে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল কেটে ফেলা হয়েছে। এর ফলে ওরাংওটাং, সুমাত্রার হাতি, গন্ডার প্রভৃতির জীবের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। ② অতিব্যবহার: খাদ্য, চামড়া ইত্যাদি আহরণের উদ্দেশ্যে মানুষ জীববৈচিত্র্যের ওপর নির্ভরশীল। অতীতে রাশিয়ার স্টেলারস সি-কাউ, প্যাসেঞ্জার পায়রা অত্যধিক শিকারের কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। বর্তমানে সামুদ্রিক মাছের বিভিন্ন প্রজাতি মানুষের অতিরিক্ত আহরণের কারণে বিলুপ্তপ্রায়।

✱ “বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশ ঘটলে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়”—দুটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো।
➛ বিদেশ থেকে নতুন প্রজাতির জীবের অনুপ্রবেশ ঘটলে বা আমদানি করা হলে, দেশীয় দুর্বল প্রজাতিগুলি বহিরাগত প্রজাতিগুলির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না ও অবলুপ্ত হয়। যেমন— ① জাহাজে আগত আমেরিকান আরশোলা (Periplaneta americana) দ্রুত ভারতীয় আরশোলা (Blatta orientalis) প্রজাতিকে বিনষ্ট করেছে। ② সৌন্দর্যবর্ধক হিসেবে কচুরিপানা গাছটিকে ব্রাজিল থেকে আনা হয়। কিন্তু খুব শীঘ্রই গাছটি তার হ্রস্বধাবক বা অফসেট দ্বারা বংশবিস্তার করে খালবিল নদীনালায় ভরে গেছে, ফলে অন্যান্য দেশীয় জলজ প্রজাতিগুলির বিলুপ্তি ঘটেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন