ভারতের প্রাচীন ইতিহাস অনুসন্ধানে সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কার এক যুগান্তকারী ঘটনা। কারণ এই আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত ধারণা ছিল ভারতীয় সভ্যতার সূচনা আর্যদের ভারতে আগমন থেকে। কিন্তু সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কার এই ধারণা ভুল বলে প্রমাণ করল। শুধু তাই নয়, এই সভ্যতা আবিষ্কৃত হবার ফলে ভারতীয় সভ্যতা যে কত প্রাচীন তাও প্রমাণিত হল। প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, দয়ারাম সাহানী এবং স্যার জন মার্শালের চেষ্টায় এই সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়। সিন্ধুনদের উপত্যকায় এই সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়। তাই এতকাল এই সভ্যতাকে বলা হত সিন্ধু সভ্যতা। কিন্তু বর্তমানে সিন্ধুনদের উপত্যকা ছাড়িয়ে এক বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। বেলুচিস্তানের সুকাজেন-দারো থেকে উত্তরপ্রদেশের মিরাট জেলার আলমগিরপুর পর্যন্ত, আবার পাঞ্জাবের রুপার থেকে গুজরাটের ভোগাবর পর্যন্ত এই সভ্যতার বিস্তার হয়েছিল। তাই এখন এই সভ্যতাকে বলা হয় হরপ্পা সভ্যতা।
❐ সময়কাল : 2600 খ্রিস্টপূর্ব থেকে 1850 খ্রিস্টপূর্ব অবধি (রেডিও কার্বন ডেটিং অনুসারে)।
❐ অবস্থান : হরপ্পা সভ্যতার বিস্তৃতির উত্তরতম অঞ্চল হল আফগানিস্তানের আমুদরিয়া নদীর তীরবর্তী শোর্তুগাই ও দক্ষিণতম অঞ্চল হল মহারাষ্ট্রের দৈমাবাদ। এই সভ্যতার পশ্চিমতম প্রান্ত হল বালুচিস্তানের অন্তর্গত সুতকাজেনদোর ও পূর্বতম অঞ্চল হল মীরাট জেলার হিন্দন নদীর তীরে অবস্থিত আলমগিরপুর। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতে সিন্ধু সভ্যতার উত্তরতম অঞ্চল হল জম্মু ও কাশ্মীরে অবস্থিত মান্ডা।
❐ ব্যাপ্তি : এই সভ্যতা উত্তর থেকে দক্ষিণে 1600 কিমি এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে 1100 কিমি বিস্তৃত ছিল।
❐ জাতিগোষ্ঠী : এই সভ্যতায় ভূমধ্যসাগরীয়, প্রোটো-অস্ট্রালয়েড, মোঙ্গলয়েড, আলপাইন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের প্রাধান্য ছিল।
❐ লিপি : এই লিপিতে প্রথম লাইন ডানদিক থেকে বামদিকে এবং তার পরের লাইন বামদিক থেকে ডানদিকে লেখা হত। এই লিখনশৈলী ‘বউস্ট্রোফেডন’ (Boustrophedon) নামে পরিচিত। এই লিপি এখনও সম্পূর্ণরূপে পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। প্রায় 270 ধরনের অক্ষর বা হরফ প্রচলিত ছিল। এগুলি ছিল মিশরের হায়ারোগ্লিফিক লিপির ন্যায় চিত্রলিপি (Pictographic), যা সিলমোহরে খোদিত ছিল।
হরপ্পা সভ্যতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নক্ষেত্র ও তার আবিষ্কারক
কেন্দ্র | আবিষ্কারক |
---|---|
হরপ্পা (1921) | দয়ারাম সাহানি |
মহেন-জো-দারো (1922) | রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় (স্যার জন মার্শালের নেতৃত্বে) |
সুতকাজেনদোর (1927) | অরেল স্টেইন |
চানহুদারো (1931) | ননীগোপাল মজুমদার এবং ম্যাকে |
রূপার (1953) | ওয়াই ডি শর্মা |
কালিবঙ্গান (1960) | বি কে থাপার |
রংপুর (1935) | এম এস ভাটস |
বালাকোট (1963) | জর্জ এফ ডেলস |
আলমগিরপুর (1958 ও 1959) | ওয়াই ডি শৰ্মা |
ধোলাভিরা (1967) | জগৎপতি যোশি (ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আর এস বিস্ত) |
সুরকোটাডা (1970) | জগৎপতি যোশি |
বানওয়ালি (1974) | আর এস বিস্ত |
লোথাল (1954) | এস আর রাও |
আমরি (1935) | ননীগোপাল মজুমদার |
হরপ্পা সভ্যতার জীবনযাত্রা
1. সেচ : কৃষি ছিল প্রধান অর্থনীতি। সিন্ধু, রাভি বা ইরাবতী, শতদ্রু প্রভৃতি নদীতে বাঁধ দিয়ে জলসেচ করা হত।
2. খাদ্যশস্য : বার্লি, যব, গম, তিল, রাই, সর্ষে, মিলেট, রাগি, জোয়ার, বাজরা। লোথাল ও রংপুরে তুষ-এর অস্তিত্ব ধান চাষের প্রমাণ দেয়।
3. ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি : কালিবঙ্গানে কাঠের লাঙলের ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে।
4. গৃহপালিত পশু : গরু, ছাগল, ভেড়া, কুকুর, শুকর, মহিষ ও ‘ষাড়কে প্রধানত’চাষের কাজে ব্যবহার করা হত। ব্যতিক্রম থাকলেও, ঘোড়ার সঙ্গে সিন্ধুর অধিবাসীরা পরিচিত ছিল না বলে মনে করা হয়।
1. আমদানি দ্রব্য : শাঁখ, পাথর, দেবদারু কাঠ, তামা, রুপা, বহুমূল্যের লাপিস লাজুলি আসত আফগানিস্তানের বাদাখশান অঞ্চল থেকে এবং দামি পাথর কার্নেলিয়ান আমদানি করা হত সৌরাষ্ট্র তথা পশ্চিম ভারত থেকে।
2. রপ্তানি দ্রব্য : মধুর সুতির বস্ত্র, নীলকান্তমণি, হাতির দাঁতের সামগ্রী, ময়ূর প্রভৃতি।
3. পরিবহণ : মালপত্র পরিবহণের জন্যে বলদ, ষাঁড়, গাধা, উট, হাতি প্রভৃতি পশুও ব্যবহার করা হত।
4. মাধ্যম : মুদ্রার ব্যবহার না থাকায় বিনিময় প্রথায় ব্যাবসা চলত ।
5. মুদ্রা/সিল : মুদ্রা ছিল না তবে সিল অনেকসময় ব্যাবসায়িক কাজে ব্যবহৃত হত।
6. ওজন/পরিমাপ/বাটখারা : চুনাপাথর ও স্টিটাইট পাথর দিয়ে ঘনকাকৃতির বাটখারার প্রচলন ছিল।
7. বাণিজ্যরত দেশ : আফগানিস্তান, ইরান, মেসোপটেমিয়া, মিশর ব্যাবিলন, পারস্য প্রভৃতি।
1. ধাতুশিল্প : সোনা, রুপার ব্যবহার ছিল। তামা, ব্রোঞ্জ দিয়ে কুঠার, বর্শা, ছুরি, করাত, সুঁচ, বঁড়শি তৈরি হত। লোহার ব্যবহার ছিল না।
2. বস্ত্রশিল্প : সুতাকাটার মাকু পাওয়া গেছে যা বয়নশিল্পের ইঙ্গিত দেয়। রং-এর চৌবাচ্চা বস্ত্ররঞ্জনের পরিচায়ক।
3. মৃৎশিল্প : মাটির জ্বালা, কলসি, থালা, পুতুল, বাঁশি, খেলনা রথ, কুঁজবিশিষ্ট ও কুঁজবিহীন ষাঁড়-এর নিদর্শন পাওয়া গেছে।
হরপ্পা ও মহেন-জো-দারোর নগরবিন্যাস থেকে জানা যায় শ্রেণিভেদ প্রথা ছিল হরপ্পা সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রে হরপ্পা সভ্যতায় ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং একইসাথে প্রাসাদোপম গৃহের নির্মাণ লক্ষ করে এই বিষয় সম্পর্কে অনুমান করা যায়। সমাজে তিনটি শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল—(i) উচ্চবিত্ত : উচ্চবিত্ত অর্থাৎ প্রথম শ্রেণিতে স্থান ছিল পুরোহিতদের। (ii) মধ্যবিত্ত : মধ্যবিত্ত অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণিতে ছিল ধনী বণিক, কারিগর ও যোদ্ধারা। (iii) নিম্নবিত্ত: নিম্নবিত্ত অর্থাৎ তৃতীয় শ্রেণিতে ছিল দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকরা। (iv) সমাজের একেবারে নিম্ন সারিতে অবস্থান ছিল ক্রীতদাসদের।
- খাদ্যাভাস : যব, বার্লি, ধান, ফলমূল, তিল, রাই, মুরগি, পশুর মাংস এবং মাছ।
- পোশাক : আধিবাসীরা (নারী ও পুরুষ উভয়ই) দেহের ঊর্ধ্বাংশ ও নিম্নাংশের জন্য সুতি ও পশমের দুই খণ্ড বস্ত্র ব্যবহার করত।
- প্রসাধনী : ভ্যানিটি ব্যাগ, লিপস্টিক, সোনা, রুপা, তামা, ব্রোঞ্জ ও পাথরের তৈরি নানান অলংকার—হার, দুল, মল, চুড়ি, কোমরবন্ধ ইত্যাদির ব্যবহার প্রচলিত ছিল। নারী-পুরুষ উভয়েরই লম্বা চুল রাখার প্রথা প্রচলিত ছিল।
- বিনোদন : পাশা খেলা, শিকার, ষাঁড়ের লড়াই, নৃত্য-গীত, রথচালনা প্রভৃতি।
1. দেবীমূর্তি: অর্ধনগ্ন নারীমূর্তির দেহে ধোঁয়া বা প্রদীপের তেলের চিহ্ন দেখে দেবী মাতৃকার পূজা প্রচলিত ছিল বলে অনুমান করা হয়। সেখানে নরবলি চিহ্নিত একটি সিল পাওয়া গেছে যা নরবলি দেওয়ার প্রথা সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়। একটি সিলে উত্থানপাদ ভঙ্গিতে-থাকা নারীমূর্তি, যার গর্ভ থেকে চারাগাছ নির্গত হয়েছে দেখে নারীকে উর্বরতার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হত বলে জানা যায়।
2. দেবমূর্তি: ভাস্কর্যের মধ্যে প্রাপ্ত হাতি, গন্ডার, বাঘ, মহিষ, হরিণ এই পাঁচটি পশুসংবলিত ত্রিমুখবিশিষ্ট এক যোগীমূর্তির নিদর্শন পাওয়া গেছে। স্যার জন মার্শাল এটিকে পশুপতি শিবের মূর্তি বা আদি শিবের মূর্তি (Proto-Shiva) বলে উল্লেখ করেছেন।
3. নর ও পশুমূর্তি: বহুসংখ্যক একশৃঙ্গবিশিষ্ট চতুষ্পদ প্রাণীর মূর্তি (পুরাতাত্ত্বিকদের ব্যাখ্যায় ইউনিকর্ন নামে চিহ্নিত) অর্ধেকটা বৃষ বা ষাঁড় এবং অর্ধেকটা নর এমন মূর্তি খোদিত সিল পাওয়া গেছে।
4. প্রতীক পূজো : তাদের মধ্যে ‘টোটেম উপাসনা' (Totemism) বা 'প্রতীক পূজা’র প্রচলন ছিল।
5. অন্যান্য : পিপল বৃক্ষ, অশ্বত্থগাছ, লিঙ্গপূজা, যোনিপূজা, পশুপূজা (ষাঁড়) প্রচলিত ছিল। ঘুঘু পাখি ও পায়রাকেও পূজা করা হত। ধর্মীয় আচারের অঙ্গ হিসেবে হরপ্পাবাসীরা মৃতদেহ সংস্কারের ক্ষেত্রে সমাধিস্থ করার রীতিতে অভ্যস্থ ছিল। সমাধিস্থ করার বিষয়ে এসময় তিনটি পদ্ধতি লক্ষ করা যায়—আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য সামগ্রীসহ পূর্ণ সমাধি, আংশিক সমাধি ও দেহাবশেষের আধার বা পাত্র সমাধি।
1. নগরকেন্দ্রিকতা : হরপ্পা সভ্যতা ছিল একটি উন্নতমানের নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার উদাহরণ। সুবিন্যস্ত রাস্তাঘাট; ভূগর্ভস্থ পয়ঃপ্রণালী, পরিকল্পিত ঘরবাড়ি প্রভৃতি থেকে এখানকার মানুষদের আধুনিক রুচিবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
2. রক্ষণশীলতা : এই সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল তীব্র রক্ষণশীলতা। বিভিন্ন স্তরে খননকার্য চালিয়ে প্রায় একই ধরনের জীবনযাত্রা প্রণালী, নগর পরিকল্পনা, ওজন বা পরিমাপ ব্যবস্থা প্রভৃতির সন্ধান পাওয়া গেছে।
3. ধর্মীয় প্রাধান্য : ভারী অস্ত্র বা তলোয়ারের নিদর্শন না পাওয়ায় মনে করা হয় পেশিশক্তির পরিবর্তে নাগরিক জীবনে ধর্মীয় বিশ্বাস বা চিন্তাভাবনাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হত।
4. শাসনব্যবস্থা : হরপ্পা সভ্যতার নগরগুলির সুপরিকল্পিত রূপরেখা, পরিকল্পিত পদ্ধতিতে বাড়িঘর নির্মাণ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থার সংরক্ষণ, সিন্ধু নদের বন্যায় বিধ্বস্ত শহরকে পুনরায় নিজের অস্তিত্ব ফিরিয়ে আনা ইত্যাদি নির্দিষ্ট কোনো প্রশাসনিক পরিকাঠামো ছাড়া সম্ভব নয়। মহেন-জো-দারোর সিটাডেলে 250 ফুট দীর্ঘ এক ইমারতের নিদর্শন দেখে মনে করা হয় যে, এটি সম্ভবত রাজপ্রাসাদ ছিল। ওখানেই আবার ৪০ ফুট × ৪০ ফুট মাপের এক বর্গাকৃতি বড়ো ঘরের সন্ধান পাওয়া গেছে। কেউ কেউ শাসনব্যবস্থায় বিত্তবান বণিকশ্রেণির প্রাধান্যের কথাও বলেছেন।
দুর্গ অঞ্চল : নগরের প্রধানত দুটি অংশ ছিল। একটি অপেক্ষাকৃত উঁচু অংশে দুর্গ আকারের বসতি তৈরি করা হত। এগুলিকে সিটাডেল বলা হত, যেখানে কর্তৃস্থানীয় ব্যক্তিরা থাকতেন এবং নীচু অংশে সাধারণ দরিদ্র মানুষেরা বসবাস করত। মহেন-জো-দারো ও হরপ্পা নগরদুটির পরিকল্পনা ছিল একই রকমের। এই কারণে অনেকে এই নগরদুটিকে ‘যমজ নগর' বা 'Twin city' বলে অভিহিত করেছেন।
স্নানাগার : মহেন-জো-দারোয় জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য বৃহৎ স্নানাগার পাওয়া গেছে। এই স্নানাগারটি আয়তনে ছিল 180 ফুট × 180 ফুট। স্নানাগারে নানা সুযোগসুবিধার মধ্যে 39 ফুট দীর্ঘ, 23 ফুট প্রশস্ত ও ৪ ফুট গভীরতাযুক্ত আধুনিককালের মতো এক সুইমিংপুলের অস্তিত্ব দেখা যায়। এই জলাশয়টিতে আধুনিককালের মতো ঠান্ডা ও গরম জলের গমনাগমন ব্যবস্থাও লক্ষ করা যায়। জল প্রবেশ ও নিকাশের ব্যবস্থা ছিল। জলাশয়ের চারদিকে ছোটো ছোটো ঘর ও গ্যালারি ছিল। ঘরগুলি সম্ভবত ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নির্মিত ছিল।
শস্যাগার : মহেন-জো-দারোর শস্যাগারের আয়তন ছিল কমবেশি ৭ হাজার বর্গফুট। অন্যদিকে, হরপ্পার শস্যাগারটি ছিল প্রায় 3 হাজার বর্গফুট। রাভি নদীর প্রাচীন (বর্তমানে লুপ্ত) খাতের নিকট হরপ্পা শস্যাগারটির ভিতরে দুই সারি মঞ্চের উপস্থিতি দেখা যায়। প্রতিটি সারিতে আবার শস্য রাখার জন্য ছয়টি করে অতিরিক্ত মঞ্জু রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন যে, মহেন-জো-দারো ও হরপ্পার দুই শস্যাগার আধুনিককালের রাষ্ট্রীয় সমবায় সংস্থার প্রয়োজন মেটাত। শস্যাগারটির পাশে শ্রমিকদের বসবাসের জন্য বস্তির মতো ঘরের অস্তিত্ব দেখা যায়।
ঘরবাড়ি ও পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা : সমান আয়তনের পোড়া ইটের তৈরি একতলা, দোতলা অথবা তিনতলার বাড়ি রাস্তার দুইপাশে থাকত। প্রতি বাড়িতে কূপ, স্নানাগার ও বাগানসহ আঙিনা ছিল। রাস্তার দিকে কোনো জানালা, দরজা ছিল না। রাস্তা সোজা ও প্রশস্ত– 9 ফুট থেকে 34 ফুট অবধি চওড়া ছিল। প্রতিটি রাজপথের দুপাশে ঢাকনাযুক্ত ভূগর্ভস্থ পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা ছিল। এছাড়া আবর্জনা কুণ্ডের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। ব্যসাম বলেছেন, ‘No other ancient civilization until that of the Romans had so efficient a system of drain'